শালবনির বিদ্যুৎপ্রকল্প পূর্ব ভারতের “ল্যান্ডমার্ক” বললেন মুখ্যমন্ত্রী
সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
“আপনারা আমার সমালোচনা করতে পারেন, কিন্তু আমাকে অবহেলা করতে পারবেন না। কারণ
আমরি শুধু বলি না, আমরা করে দেখাই। পাঁচটা বড় কোম্পানি আসছে, যারা খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করবে। আরও ছয়টা ইকোনমিক করিডর করা হচ্ছে।” আজ শালবনিতে জিন্দল গোষ্ঠীর ৮০০ মেগাওয়াট করে দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করে পশ্চিমবঙ্গকে শিল্প গন্তব্যে পরিণত করতে এবং রাজ্যে উন্নয়নের মাইলফলক তৈরি করতে এভাবেই আত্মবিশ্বাস প্রকট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু জিন্দল গোষ্ঠীর বিদ্যুত্কেন্দ্র নয় রাজ্যে বিদ্যুতের জন্য রাজ্য সরকার আরও ৪৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করবে বলেও এদিন ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে জানান, জিন্দলদের বিদ্যুৎ প্রকল্প হল একটি ল্যান্ডমার্ক প্রজেক্ট। এটা হলে ২৩ টি জেলার মানুষই উপকৃত হবেন। পূর্ব ভারতে এই ধরনের প্রজেক্ট এর আগে কখনও হয়নি। উল্লেখযোগ্য, জিন্দল গোষ্ঠীরই বিদ্যুৎ প্রকল্প ইকো ফ্রেন্ডলি হওয়ায় এই প্রকল্প থেকে দূষণের সম্ভাবনা কম। এই প্রকল্প থেকে রাজ্য সরকার বিদ্যুৎ কিনে নেবে এ কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন প্রায় ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে জিন্দল গোষ্ঠীর এই বিদ্যুৎ প্রকল্পে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন,”আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম তখন ২০০০ মেগাওয়াট ছিল। এখন সেটা ২০ হাজার মেগাওয়াট হয়েছে।আগে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১২ ঘন্টাই বিদ্যুৎ থাকতো না। এখন ২৪×৭ বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।”
সরকারি তথ্য অনুযায়ী রাজ্যে পালা বদলের পর বিদ্যুতের জন্য ৭৬ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হযেছে। ৩.৫ লক্ষ লাইন ও ৭৫০ টার বেশি সাব স্টেশন তৈরি হয়েছে। ১ কোটি ৭ লক্ষ উপভোক্তার সংখ্যা এখন হয়েছে ২ কোটি ৩০ লক্ষ। এর পাশাপাশি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা খাদান কিছু দিনের মধ্যেই কয়লা উত্তোলন এর কাজ শুরু করে দেবে। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, “ওখানে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়ে গেলে আগামী একশো বছরে আমাদের আর কোনো বিদ্যুতের ঘাটতি থাকবে না।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, জেএসডব্লু ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে টেকনিক্যাল এডুকেশন সেন্টারের মাধ্যমে স্কিল ট্রেনিং দেওয়া হবে। এজন্য দু হাজার একর জমির উপর আজ একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিলান্যাসও করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে এখনই ৪০ লক্ষ ট্রেনড লেবার রয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় শিল্পের জন্য ইতিমধ্যেই ১২ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে রাজ্যের সাফল্য উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান বাণিজ্য সম্মেলনে ৯৯ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে তার মধ্যে ১৩ লক্ষ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই বিনিয়োগ হয়েছে। শিল্প উন্নয়নের পাশাপাশি ধর্মীয় পর্যটনেও রাজ্য যে এগিয়ে চলেছে কি সেকথা বোঝাতে দক্ষিণেশ্বরের পর কালীঘাট মন্দিরের স্কাইওয়াক উদ্বোধন, চলতি মাসের শেষে দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের কথাও উল্লেখ করেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ” সবাই সবাইকে ভালোবাসুক। আমি এটাই চাই। ভারত একটা বড় দেশ। এখানে অনেক রাজ্য, অনেক ভাষা, অনেক পোষাক, অনেক খাদ্যাভ্যাস রয়েছে। আমাদের উচিৎ দেশকে এক রাখা, শক্তিশালী করা, দেশকে ভাগ করা নয়।”