বলিউডে ফাওয়াদ খানের ফেরার গুঞ্জন ঘিরে যখন অনুরাগীদের মধ্যে কৌতূহল, তখনই উলটো সুর ধরা পড়ল জনমত ও রাজনৈতিক আবহে। বাণী কাপুরের বিপরীতে তাঁর অভিনীত ছবি ‘আবির গুলাল’-এর ট্রেলার ১ এপ্রিল প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। পাকিস্তানি অভিনেতার উপস্থিতিই হয়ে দাঁড়ায় বিতর্কের মূল কারণ।
ছবিটি ৯ মে মুক্তির কথা থাকলেও, কাশ্মীরে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ভয়াবহ জঙ্গি হামলা জনমতকে আরও ক্ষুব্ধ করে তোলে। একদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বয়কটের ডাক, অন্যদিকে সিনেমা হল মালিকদের মধ্যে দোলাচল—সব মিলিয়ে ক্রমশ জটিল হতে থাকে পরিস্থিতি।
শেষমেশ, ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘আবির গুলাল’ ভারতে মুক্তি পাবে না।
এই সিদ্ধান্তের পেছনে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছে ফেডারেশন অফ ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজ (FWICE), যারা ইতিমধ্যেই পুনরায় জানিয়ে দিয়েছে—ভারতের বিনোদন জগতে পাকিস্তানি শিল্পীদের সঙ্গে কোনও রকম সহযোগিতা তারা মেনে নেবে না।
ছবিটির বিরুদ্ধে প্রকাশ্য আপত্তি তোলেন ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অশোক পণ্ডিত। তাঁর বক্তব্য, “এই ঘটনা জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ। ৩০ বছর ধরে সন্ত্রাসের মুখে পড়ছে ভারত। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানি শিল্পীদের দিয়ে কাজ করাটা কীভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে?”
তিনি আরও বলেন, “লোকজন ভাবে, আমার পরিবারের কেউ তো মরেনি। কিন্তু যদি এই ছবির নায়িকা বা নির্মাতাদের পরিবারের কারও ওপর গুলি চলত, তাহলেও কি তাঁরা ফাওয়াদ খানের সঙ্গে কাজ করতেন?”
তবে এই প্রথমবার নয়, যখন ভারতে ফাওয়াদ খানের ছবির মুক্তি প্রশ্নের মুখে পড়ল। ২০১৬ সালে উরি হামলার পর থেকেই পাকিস্তানি শিল্পীদের নিয়ে বলিউডে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। সেই সময়ও ফাওয়াদ অভিনীত করণ জোহরের ছবি ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ বিপাকে পড়েছিল। প্রযোজক করণ জোহর পরে ক্ষমাও চেয়েছিলেন এবং জানিয়েছিলেন, তিনি ভবিষ্যতে আর পাকিস্তানি শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করবেন না।
এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে, ‘আবির গুলাল’ ভারতে মুক্তি না পাওয়া যেন শুধুই একটি ছবির জার্নি থেমে যাওয়া নয়—এটি ভারত-পাক সম্পর্ক, শিল্প ও রাজনীতির টানাপোড়েনের আরও একটি প্রতিফলন।