মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় ভক্ত-ভগবান
সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
মঙ্গলে ঊষা, বুধে পা।
দিঘার সমুদ্র সৈকত জুড়ে তাই এখন সাজো সাজো রব। একদিন পরেই সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। বুধবার অক্ষয় তৃতীয়ার শুভলগ্নে দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠা। প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর দ্বারোদঘাটন ও উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জগন্নাথ মন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবেন পুরীর জগন্নাথ ধামের সেবাইত রাজেশ দ্বৈতাপতি। প্রাণপ্রতিষ্ঠা সম্পূর্ণ হলে মন্দিরের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। উদ্বোধনী পর্ব সেরে মুখ্যমন্ত্রী নিজে মন্দিরে আরতি করবেন। এরপর জগন্নাথ মন্দিরের পরিচালন ভার ইসকনের হাতে তুলে দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই দীঘার জগন্নাথ মন্দিরে পৌঁছেছেন ইসকনের রাধারমন দাস। পুরীর জগন্নাথ ধামের সমস্ত আচার-আচরণ মেনেই চলবে দীঘার জগন্নাথ মন্দির। একই সঙ্গে গৌড়ীয় বঙ্গ রীতিও মানা হবে এই জগন্নাথ মন্দিরে। বুধবার থেকেই জগন্নাথ মন্দিরে চালু হবে ছাপ্পান্ন ভোগ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে শুরু হবে মহাযজ্ঞ। এই মহাযজ্ঞের দায়িত্বে থাকবেন রাজেশ দ্বৈতাপতি। এরপর মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত হবে পুণ্যাহুতি। ধর্মীয় রীতি মেনে দিনভর চলবে যজ্ঞ অনুষ্ঠান। বুধবার সকালেও পুণ্যাহুতি হবে মন্দির অঙ্গনে। এরপর হবে প্রাণ প্রতিষ্ঠার আচার-আচরণ।
দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনী পর্বের চূড়ান্ত প্রস্তুতি প্রায় সম্পূর্ণ। সকাল থেকেই মন্দির সংলগ্ন এলাকায় উৎসুক মানুষের ভিড়। দুপুর বারোটা নাগাদ হেলিকপ্টারে দিঘায় পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুরীর জগন্নাথধামের আদলে ধর্মক্ষেত্র তৈরির দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণের লক্ষ্য নিয়েই দীঘায় পৌছেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই সদাব্যস্ত মুখ্যমন্ত্রী দিনভর দফায় দফায় মন্দির পরিদর্শন করেন। মন্দিরের উদ্বোধনী পর্বের প্রস্তুতির কাজ খুঁটিয়ে দেখেন। শুধু মুখ্যমন্ত্রী একা নন তার সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ও মন্ত্রীদের এক প্রতিনিধি দলও। একে একে দিঘার সমুদ্র সৈকতে এসেছেন রাজ্যের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তি থেকে জ্ঞানী-গুণীজন। দিঘায় জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রেরও উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে দিঘার সমুদ্র সৈকতে প্রচুর দর্শনার্থীদের ভিড়। নগরের আলোকসজ্জায় সজ্জিত দীঘার সমুদ্র সৈকত ও এই জগন্নাথ মন্দির এক মায়াবী রূপ ধারণ করেছে জা দেখতে ভিড় উপচে পড়েছে সৈকত শহরে। মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন ভিআইপি নয় সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের উপস্থিতিতে এই জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন কর্মসূচি পালন করাই লক্ষ্য রাজ্যের। মহকুম্ভের মত অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সেদিকেও সতর্ক থাকার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। উদ্বোধনের পর জগন্নাথ মন্দির পরিচালনভার ইসকনের হাতে হস্তান্তরিত করবে রাজ্য সরকার। প্রসঙ্গত, আগেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে দিঘায় এই ধরনের ধর্মক্ষেত্র তৈরীর স্বপ্ন দীর্ঘদিনের। এই ধর্মক্ষেত্রকে কেন্দ্র করে শুধু ধর্মীয় পর্যটন তৈরি হবে তাই নয় তার সঙ্গে তৈরি হবে প্রচুর কর্মসংস্থানও। সেই স্বপ্ন পূরণের চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছে আপামর রাজ্যবাসির সঙ্গে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এর অপেক্ষায় মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য প্রশাসনও।
