সৈকতনগরী দিঘায় আকাশভরা আলো আর মন্ত্রোচ্চারণের ধ্বনিতে ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায় রচিত হচ্ছে। অক্ষয়তৃতীয়ার এক দিন আগে, মঙ্গলবার সকাল থেকে দিঘা জগন্নাথ মন্দির প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে বিশেষ মহাযজ্ঞ। মন্দিরের নবনির্মিত কাঠামোয় পবিত্রতা আনার উদ্দেশ্যে দিনভর চলেছে হোমযজ্ঞ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিকেলে পূর্ণাহুতি দিয়ে এই মহাযজ্ঞের সমাপ্তি করবেন।
গত শুক্রবার থেকেই দিঘায় শুরু হয়েছে যজ্ঞপর্ব। বাস্তুপুরুষের উদ্দেশ্যে যজ্ঞ করে মন্দিরের শুদ্ধিকরণের সূচনা হয়েছিল। ক্রমে বিভিন্ন দেবতার উদ্দেশে আরাধনা ও বিগ্রহের দুগ্ধস্নানের মধ্য দিয়ে চলে এসেছে আজকের মহাযজ্ঞের পর্যায়ে। মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রদীপ জ্বালিয়ে দেবতাকে আহ্বান জানানো হয়েছে, চলছে নিরবচ্ছিন্ন মন্ত্রোচ্চারণ। লক্ষ্য, এক কোটি মন্ত্রপাঠ সম্পন্ন করা।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে নির্মিত দিঘার জগন্নাথধামে কলিঙ্গ স্থাপত্যশৈলীর ছাপ স্পষ্ট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার মন্দির পরিদর্শনে এসে মুগ্ধ হয়ে প্রশংসা করেন এই অনবদ্য শিল্পকীর্তির। বলেন, “এখানে অধ্যাত্মবাদ এবং সম্প্রীতির এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটেছে।”
মন্দির উদ্বোধনের আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দিঘা শহরে। হোটেল, রাস্তাঘাট থেকে সমুদ্রসৈকত! সর্বত্র রঙিন আলোর বন্যা। অস্থায়ী মণ্ডপে বসানো হয়েছে এলইডি স্ক্রিন, যাতে দূর থেকেও দর্শনার্থীরা মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন উপভোগ করতে পারেন।
আগামীকাল অক্ষয়তৃতীয়ার মহামুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে দিঘা জগন্নাথধামের দ্বারোদ্ঘাটন এবং বিগ্রহের প্রথম আরতি অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যায় এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। দিঘার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও এই মন্দির কেন্দ্র করে নতুন জোয়ারের আশায় বুক বাঁধছে স্থানীয়রা।
দিঘার আকাশে তাই আজ শুধুই শুভ বার্তা ধর্ম, সংস্কৃতি আর সম্ভাবনার আলোকছটা!