সমুদ্র-ধর্ম-রাষ্ট্রনীতি ও রাজনীতির সমাহারে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র হতে চলেছে দিঘা
সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
আধ্যাত্মিকতা, ধর্মনীতি, রাষ্ট্রনীতি, রাজনীতির সঙ্গে মানুষের ভাবাবেগ ও ধর্মীয় ঐতিহ্য মিলেমিশে একাকার। এক কথায় ভক্ত ও ভগবানের মেলবন্ধনে সমুদ্র-ধর্মএকাত্ম হয়ে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে দিঘার বালুকাবেলা। যার ভরকেন্দ্র হিসেবে মর্যাদা পেতে চলেছে দিঘার জগন্নাথ মন্দির। আজ বিকেলেই পুণ্যাহুতি দিয়ে যার জয়ডঙ্কা বাজাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই দীঘায় প্রচুর মানুষের ঢল নেমেছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী যত মানুষের সমাগমের আশা করা হয়েছিল বাস্তবে তার থেকে অনেক বেশি এই মন্দিরের উদ্বোধনী পর্বে ভক্ত সমাগম
হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সে কারণেই তিনি দীঘা সমুদ্র সৈকত সহ গোটা শহর জুড়ে নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা যেমন বাড়ানো হয়েছে তেমনি বেড়েছে সিসি ক্যামেরার সংখ্যাও।
আর মাত্র কিছু সমযের অপেক্ষা। সোমবার বিকেলেই হবে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে পুণ্যাহুতি দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাল থেকেই যে মহাযজ্ঞ চলছে আজ বিকেলে সেই যজ্ঞে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী। বিকেলের শুভক্ষণে পুণ্যাহুতি দেবেন তিনি। আর এই মহেন্দ্রক্ষণ নিয়ে সকাল থেকেই দীঘার সমুদ্র সৈকত ও জগন্নাথ মন্দিরে উন্মাদনা তুঙ্গে। মহাযজ্ঞকুন্ডে যে কলস স্থাপিত হয়েছে সেই কলসে বিভিন্ন তীর্থস্থান থেকে জল এনে তা পূর্ণ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পুণ্যাহুতি দেওয়ার প্রারম্ভিক পর্বের সমাপ্তি। তারপরই শুরু হবে নানা আচার-উপাচার। জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রাকে পুণ্য স্নান করিয়ে সুসজ্জিত খাটে শয়ন করানো হবে। বুধবার অক্ষয় তৃতীয়ার শুভলগ্নে তাদের ঘুম ভাঙিয়ে মন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবেন রাজেশ দয়িতাপতি। প্রাণপ্রতিষ্ঠর পর মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করে মন্দির উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্বোধনী পর্ব সাঙ্গ হলে জগন্নাথ মন্দির পরিচালনার ভার তুলে দেওয়া হবে ইস্কনের হাতে। পুরীর মন্দিরের যাবতীয় আচার- আচরণের পাশাপাশি গৌড়ীয় বঙ্গ রীতিনীতিও মেনে চলা হবে মন্দির অঙ্গণে।
আজ সকাল থেকেই দিঘার জগন্নাথ মন্দির অঙ্গনে চলছে মহাযজ্ঞ। ১০০ কুইন্টাল আমকাঠ ও বেলকাঠ এবং দুই কুইন্টাল ঘি দিয়ে করা হয়েছে যজ্ঞের আয়োজন। মহাযজ্ঞ ও পুজোর আয়োজনের তদারকি করছেন পুরীর জগন্নাথ ধামের শিবায় রাজেশ দয়িতাপতি। আর সমস্ত রীতি ও আচার-আচরণ পরিচালনায় রয়েছেন ইস্কনের রাধারমণ দাস। এই দুইজনকে সঙ্গে নিয়ে সকাল থেকে জগন্নাথ মন্দিরের যাবতীয় ব্যবস্থাপনার তদারকি করছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।