শহর জুড়ে যেন আগুনের দাপট। শুক্রবার দুপুরে ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কেঁপে উঠল সল্টলেকের সেক্টর ফাইভ। টেকনোপলিস সংলগ্ন একটি ফ্লেক্স ও রাসায়নিক তৈরির কারখানায় আগুন লাগার ঘটনায় মুহূর্তে কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। বিস্ফোরণের শব্দে চমকে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আগুন ছড়িয়ে পড়ে কারখানার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে, চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।
দমকলের আটটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। ঘিঞ্জি জনবহুল এলাকার মাঝে থাকা এই কারখানায় বিপুল পরিমাণ দাহ্য রাসায়নিক মজুত থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। প্রতিটি মুহূর্তেই বাড়ছে বিপদের আশঙ্কা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দুপুর ২টো নাগাদ আগুনের সূচনা। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে বিস্ফোরণের আওয়াজে। মুহূর্তেই কারখানার ছাদ থেকে আকাশে উঠতে থাকে ঘন কালো ধোঁয়া। দমকল কর্মীরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পাঁচিল টপকে কারখানার ভিতরে ঢুকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি জানান, “ভিতরে কেউ আটকে নেই বলে প্রাথমিকভাবে খবর পেয়েছি। দমকলের কর্মীরা সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছেন। খুব দ্রুত আগুন আয়ত্তে আনা যাবে বলেই আশা করছি।”
এদিকে, চার দিনের ব্যবধানে শহরে এটি চতুর্থ অগ্নিকাণ্ড। মঙ্গলবার রাতে মেছুয়া বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ১৫ জন। বৃহস্পতিবার লেকটাউন ও চিনারপার্কে দুটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় শহরজুড়ে। আজ ফের আগুনে ঝলসে উঠল সেক্টর ফাইভের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা।
এই ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বারবার কেন আগুন লাগছে—তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনিক স্তরেই। শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অগ্নিনির্বাপন পরিকাঠামো নিয়েও তৈরি হয়েছে নানাবিধ প্রশ্ন।
আগুনের উৎস, নিরাপত্তার ঘাটতি এবং প্রশাসনের তৎপরতা নিয়ে বিস্তারিত তদন্তের দাবি জানাতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। দমকল সূত্রে জানানো হয়েছে, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পরেই শুরু হবে তদন্ত।
