আবারও রক্তাক্ত রাজনীতি রাতের অন্ধকারে নিখোঁজ এক তৃণমূল কর্মীর নগ্ন, ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার জয়হাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সোনাডাঙিতে। মৃত ব্যক্তির নাম সুব্রত দেবনাথ ওরফে বাপন (৪২)। তিনি পেশায় গৃহশিক্ষক এবং একটি বেসরকারি বিমা কোম্পানির এজেন্ট ছিলেন। পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী হিসেবেও এলাকায় পরিচিত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতের খাবার শেষ করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন সুব্রতবাবু। স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা ভেবেছিলেন, প্রতিদিনের মতো পাশের কালভার্টের কাছে হাওয়া খেতে গিয়েছেন। কিন্তু গভীর রাত পর্যন্ত না ফেরায় উদ্বেগ ছড়ায় পরিবারে। রাত একটার দিকে কাকিমা ফোন করে খবর দেন ভাইপো অরিজিৎ দেবনাথকে। সকালে খোঁজ শুরু হতেই আতঙ্কের চিত্র সামনে আসে।
শনিবার ভোরে গ্রামবাসীরা দেখতে পান, বাড়ি থেকে মাত্র ৩০ মিটার দূরে শ্রীমতি নদীর কাদার মধ্যে পড়ে রয়েছে সুব্রতের উলঙ্গ, রক্তাক্ত দেহ। শরীরে ছুরির আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট। পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে।
ভাইপো অরিজিৎ দেবনাথ বলেন, “আমার কাকিমা রাত একটা নাগাদ ফোন করে জানান, কাকু বাড়ি ফেরেননি। সকালে নদীর ধারে গিয়ে দেখি দেহ পড়ে রয়েছে। ছুরি দিয়ে খুন করা হয়েছে। কেন খুন করা হল, জানি না। তবে দোষীর কঠোর শাস্তি চাই।”
স্থানীয় তৃণমূল প্রধান রফিকউদ্দিন শেখ জানান, “রাত সাড়ে আটটা নাগাদ সুব্রতবাবু খাওয়ার পর বেরিয়েছিলেন। সাধারণত কালভার্টের কাছে বসে থাকতেন। সকালে প্রতিবেশীরা দেখেন, নদীতে উলঙ্গ অবস্থায় তাঁর দেহ পড়ে রয়েছে। প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”
ঘটনার পর ইটাহার থানার পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তে পাঠায়। পাশাপাশি খুনের রহস্য উন্মোচনে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তা জানতে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ ও ক্লু সংগ্রহ।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল কর্মী হওয়ায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না স্থানীয়রা। পুলিশ অবশ্য এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলতে নারাজ। তবে এই খুনকে কেন্দ্র করে এলাকায় ছড়িয়েছে ব্যাপক আতঙ্ক ও চাপা উত্তেজনা।