সোনার বাজারে এক নজিরবিহীন পতন দেখা গেল সোমবার। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতির প্রভাব পড়ল সোনার দরে। দিল্লির বাজারে একদিনে সোনার দাম প্রায় ৩,৪০০ টাকা কমে গিয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত ১০ মাসে এত বড় পতন আর দেখা যায়নি।
জেনেভায় অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী মার্কিন-চিন বাণিজ্য আলোচনায় দুটি দেশই ৯০ দিনের জন্য একে অপরের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চিনা পণ্যের উপর তার শুল্ক হার ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনতে রাজি হয়েছে। একইসঙ্গে চিনও ৯০ দিনের জন্য আমেরিকান পণ্যের উপর শুল্ক হার ১০ শতাংশে নামিয়ে আনবে। এই সিদ্ধান্ত বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিয়েছে, যার ফলে নিরাপদ বিনিয়োগের বিকল্প হিসেবে সোনার প্রতি আগ্রহ অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে।
সোমবার দিল্লির বাজারে প্রতি ১০ গ্রামে সোনার দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৯৬,৫৫০ টাকা। অল ইন্ডিয়া সারাফা অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, ৯৯.৫ শতাংশ বিশুদ্ধ সোনার দাম ৩,৪০০ টাকা কমে প্রতি ১০ গ্রামে নেমেছে ৯৬,১০০ টাকায়। বিশ্ববাজারে এই সময়ের মধ্যে প্রতি আউন্স সোনার দাম কমেছে প্রায় ১০০ মার্কিন ডলার।
শুধু বাণিজ্য আলোচনাই নয়, ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও কিছু ইতিবাচক সংকেত পাওয়া যাচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির ইঙ্গিত এবং ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক পদক্ষেপ বন্ধের চুক্তি বিশ্ববাজারে অনিশ্চয়তা কমিয়েছে। এই কারণগুলির সম্মিলিত প্রভাবেই সোনার চাহিদা হ্রাস পেয়েছে এবং দামেও বড়সড় পতন ঘটেছে।
বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন বিশ্বজুড়ে অনিশ্চয়তা বাড়ে, তখন সোনা একটি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে যেহেতু আন্তর্জাতিক এবং ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে, তাই বিনিয়োগকারীরা সোনার বদলে অন্য সম্পদে নজর দিচ্ছেন। ফলে সোনার দরে এমন বিপুল পতন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
