সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ২৫ শতাংশ ডিএ বা মহার্ঘ্যভাতা দিতে রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে প্রায় ১০ হাজার ৮২৫ কোটির বেশি টাকা খরচ করতে হবে। রাজ্যের আর্থিক টানাটানির সংসারে এই বিরাট পরিমাণ অর্থের যোগান দিতে রাজ্য সরকারকে বেগ পেতে হলেও ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে সরকারি কর্মীদের অনুকূলে রাখতে সহায়ক হতে পারে বলে করা হচ্ছে।
২০০৯ সালের রোপা মেনে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের এই ডিএ মামলায় যুক্ত রয়েছেন সরকারি কর্মচারী ছাড়াও গ্র্যান্ট-ইন-এইড হঠাৎ শিক্ষক-অশিক্ষক, বোর্ড ও কর্পোরেশনের কর্মচারীরাও। এই মামলার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন পেনশনভোগীরাও। ২০০৬ সাল থেকে রাজ্য সরকারি কর্মচারী, গ্রান্ট ইন এইড ও পেনশনভোগীদের মোট বকেয়া ডিএ-র পরিমাণ সব মিলিয়ে প্রায় ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকার বেশি অর্থাৎ প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মোট বকেয়া প্রায় ১২ হাজার কোটি, গ্রান্ট-ইন-এইড এর জন্য সাড়ে ১৮ হাজার কোটি এবং পেনশনভোগীদের জন্য ১১ হাজার ৭০০ কোটি টাকারও বেশি। সব মিলিয়ে রাজ্যের কোষাগার থেকে ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকার বেশি বা প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা সম্পূর্ণ বকেয়া ডিএ মেটাতে খরচ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি করোল যখন প্রাথমিকভাবে ৫০ শতাংশ বকেয়া দিয়ে দেওয়ার কথা জানান তখনই রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংদি আঁতকে ওঠেন। সিংভির কথায় ” ৫০ শতাংশ বকেয়া পরিশোধ করতে গেলে রাজ্যকে প্রায় ২০ হাজার কোটির বেশি টাকা খরচ করতে হবে। এই টাকা খরচ করতে হলে রাজ্যের শিরদাঁড়া ভেঙে যাবে।” ঠিক এভাবেই রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতির কথা আদালতকে জানান রাজ্যের আইনজীবী মনু সিংভি। অতঃপর বিচারপতি ও আইনজীবী দরকষাকষির মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ চার সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি করোল। ২০০৯ সাল থেকে বকেয়া ধরলে
যার জন্য রাজ্যকে ১১ হাজার কোটির বেশি টাকা গুণতে হবে। ২০২২ সাল থেকে এই ডিএ মামলায় ১৮ বার শুনানি পিছিয়েছে।