নিজেদের কাজ ফিরে পাওয়ার দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নেমেছিলেন তাঁরা। পুলিশের লাঠির ঘায়ে রক্তাক্তও হয়েছিলেন। এবার সেই চাকরি হারানো আন্দোলনকারীদের মধ্যেই পাঁচ জনকে থানায় হাজিরা দিতে বলল পুলিশ। হাজিরা না দিলে ৩৫(৬) ধারায় মামলা রুজুর হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে ফের বিতর্ক। প্রশ্ন উঠছে, যাঁরা আন্দোলনে মার খেলেন, রক্তাক্ত হলেন, হাত ভাঙল তাঁদেরই, এবার কি তাঁরাই আইনের আসামি?
চাকরিচ্যুত শিক্ষক চিন্ময় মণ্ডল জানিয়েছেন, “আমাদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি ক্ষতি ও সরকারি কর্মীদের হুমকির অভিযোগে বিধাননগর উত্তর থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়েছে ১৯ ও ২০ তারিখে। হাজিরা না দিলে গ্রেফতারের কথা বলা হচ্ছে। আমাদের প্রশ্ন, কেন একের পর এক নতুন ধারায় মামলা রুজু হচ্ছে? কেন আলাদা আলাদা করে তলব করা হচ্ছে? আমরা নিরস্ত্র, শান্তিপূর্ণ অবস্থানে ছিলাম, আমাদের উপরেই চলল লাঠিচার্জ, আবার অভিযোগও আমাদের বিরুদ্ধে?”
চলতি সপ্তাহেই বিকাশভবন অভিযানে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় চাকরি হারানো আন্দোলনকারীদের। অভিযোগ, পুলিশের লাঠিচার্জে একাধিক আন্দোলনকারী গুরুতর জখম হন। তবে পুলিশের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই তারা বাধ্য হয় লাঠি চালাতে। ঘটনার ভিডিও ও চিত্র সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় নিন্দার ঝড় ওঠে বিভিন্ন মহলে। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, “দিদির কথার উপর ভরসা রাখা উচিত। কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকা উচিত নয়।”
তবে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, “চাকরি খুইয়ে আমরা পথে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলাম। কোনও অস্ত্র ছিল না হাতে, ছিল শুধু ন্যায্য দাবির প্রতি অটল মন। অথচ আমাদেরই আজ তলব, আমাদের বিরুদ্ধেই মামলা! এটা কি ন্যায্য?” চাপা উত্তেজনার মধ্যেই আন্দোলন অব্যাহত। দাবি, সরকারের প্রতিশ্রুতি মতো দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাজে ফেরানো হোক।