বলিউডের ইতিহাসে এমন কিছু ঘটনা বা মুহূর্ত আছে যে ঘটনাগুলি শুধুমাত্র স্মৃতি হিসেবে রয়ে গিয়েছে তা নয়। বরং আদর্শ হিসেবে আজও অনুপ্রেরণা যোগায় পরবর্তী প্রজন্মকে। ৮০-র দশকে এক জনপ্রিয় এবং প্রতিভাবান অভিনেত্রী স্মিতা পাতিল। ‘মির্চ মশালা’, ‘মন্থন’, ‘ভূমিকা’, ‘অর্থ’— একের পর এক ছবি উপহার দিয়ে সমালোচকদেরও প্রশংসা কুড়িয়ে নিয়েছিলেন তিনি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সুনাম অর্জন করে নিয়েছিলেন স্মিতা। এ বার মা স্মিতা পাতিলকে নিয়ে বড়সড় সত্যি ফাঁস করলেন ছেলে প্রতীক বব্বর।
সম্প্রতি স্মিতা পাতিলের ছেলে প্রতীক বব্বর একটি ইন্টারভিউতে এমনই এক দুর্লভ ঘটনা ভাগ করে নিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৮২ সালের সুপারহিট ছবি ‘শক্তি’-র সেটে। সেখানে তখন দিলীপ কুমার, অমিতাভ বচ্চন, এবং রেখার মতো নামকরা অভিনেতা অভিনেত্রীরা একসঙ্গে কাজ করছিলেন। প্রতীকের কথায়, রেখা প্রত্যেক দিন সেটে বড় একটা টিফিনবক্স নিয়ে আসতেন। সেই খাবার সবাই ভাগ করে খেতেন। তবে সেই খাবারে শুধুমাত্র তারকা অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরই ভাগ থাকত, তেমনটি কিন্তু মোটেই না। খাবার ভাগ করে নেওয়ার চল ছিল সেটের লাইটম্যানদের সঙ্গেও। খাবারে ভাগ বসাতেন তৎকালীন সময়ে এক নম্বর অভিনেত্রী স্মিতা পাতিলও। আর তিনি খেতেন সেটের সবার সঙ্গে একসঙ্গে মাটিতে বসে। কিন্তু তারকারা খেতেন নিজেদের ভ্যানে বসে।
একদিন লাইটম্যানদের পাশে ফ্লোরে বসে খেতে দেখে, অমিতাভ বচ্চন স্মিতাকে ডেকে সরিয়ে নিয়ে যান। অমিতাভ নাকি বলেছিলেন, “তুমি এ ভাবে নিচে বসে খেলে আমাদের খারাপ লাগে। কারণ আমরা তো এমনটা করব না, তখন মনে হবে আমরাই অহংকারী।” কিন্তু স্মিতা ছিলেন একেবারে অন্য ধাতুতে গড়া মানুষ। প্রতীকের মতে, তাঁর মা স্পষ্ট জবাব দিয়েছিলেন, “আপনি যান ভ্যানে। আমি এখানেই বসে সবার সঙ্গেই খাব।”
এই ঘটনা মনে করিয়ে দেয় স্মিতা পাতিলের তারকাসুলভ অহংবোধ ছিল না। বরং সাধারণ মানুষের প্রতি তাঁর যে শ্রদ্ধা ও হৃদ্যতা প্রকাশ পেত, সেটাই তাঁকে স্মরণীয় করে রেখেছে আজও। একটা সময় অমিতাভ নিজেও স্মৃতিচারণায় স্বীকার করেছিলেন, ‘নমক হালাল’-এর সেটে স্মিতা ভীষণ অস্বস্তিতে ছিলেন। কারণ তাঁর চরিত্রের কিছু দিক তাঁর নিজের মানানসই মনে হয়নি। কিন্তু পেশাগত ভাবে নিখুঁত ও প্রফেশনাল ছিলেন। স্মিতা পাতিল, শুধু একজন অভিনেত্রী ছিলেন না, পাশাপাশি জানতেন, নীতি, ন্যায় আর মানবিকতার সঠিক পাঠও।