ফের বিশ্ব জুড়ে ভয় ধরাচ্ছে করোনা। এবার আমেরিকা থেকে পাওয়া এক প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সেদেশের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন জানাচ্ছে, ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে প্রতিসপ্তাহে গড়ে ৩৫০ জনেরও বেশি মানুষ কোভিড-১৯ এর কারণে প্রাণ হারিয়েছেন। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে আমেরিকা। যদিও এই সংখ্যা অতীতের তুলনায় অনেক কম, তবুও এই পরিসংখ্যান কম উদ্বেগের নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার নতুন করে বাড়বাড়ন্তের জন্য মূলত দায়ী করোনা ভাইরাসের নতুন রূপ “ওমিক্রন জেএন-১”, সাব ভ্যারিয়েন্ট “এলএফ.৭” এবং এনবি.১.৮। এই রূপগুলি আরও বেশি সংক্রামক এবং কিছু ক্ষেত্রে আগের তুলনায় ভয়াবহ উপসর্গ সৃষ্টি করছে। বুক টানটান ভাব, কাশি ও শরীর ব্যথা, জ্বর, গলায় ব্যথা ও ফোলাভাব, অতিরিক্ত ক্লান্তি ইত্যাদি উপসর্গ থাকলেই অবহেলা নয়।
আমেরিকায় কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পিছনে কয়েকটি বড় কারণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০২৪-২৫ মরশুমে ১৮ বছর বা তার ঊর্ধ্বে মাত্র ২৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশুদের মধ্যে মাত্র ১৩ শতাংশ মানুষ আপডেটেড কোভিড টিকা নিয়েছেন। এতে কমে আসছে প্রতিরোধ ক্ষমতা। অনেকের দেহে টিকার কার্যক্ষমতা যথেষ্ট শক্তিশালী হচ্ছেনা। বিশেষ করে যারা জিনগতভাবে দুর্বল বা আগে থেকেই প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। টিকার মাধ্যমে যে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে, তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে ‘ইমিউনোসেনেসেন্স’ বা বয়সজনিত প্রতিরোধ-ক্ষমতা হ্রাসের কারণে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে।
বর্তমানে প্যাক্সলোভিড (ফাইজার) এবং মলনুপিরাভির (মার্ক) এর মতো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ সহজলভ্য আমেরিকার বাজারে। এই ওষুধগুলি উপসর্গ শুরু হওয়ার ৫ দিনের মধ্যে না নিলে কার্যকারিতা কমে যায়। অনেকেই করোনা সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দেওয়ার পরেও ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করছেন না। যার ফলে প্রাণহানির ঝুঁকি বাড়ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তাই আপাতত সচেতনতা সাবধানতা আর অ্যান্টিভাইরাল ব্যবহারই বাঁচার পথ।