অসমের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিস্ফোরক মন্তব্যে। কংগ্রেস নেতা ও সদ্য নিযুক্ত অসম প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গৌরব গগৈ এবং তাঁর ব্রিটিশ নাগরিক স্ত্রী এলিজাবেথকে “ভারতবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত” বলে সরাসরি অভিযোগ তুললেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে হিমন্ত বিশ্বশর্মা দাবি করেন, “আমার কাছে সমস্ত নথি রয়েছে। এই নথি প্রমাণ করে, গৌরব গগৈ ও তাঁর স্ত্রী দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। তাঁরা একটি আন্তর্জাতিক জলবায়ু লবির হয়ে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছেন। এমনকি তাদের পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গেও যোগসূত্র রয়েছে।”
হিমন্ত বিশ্বশর্মা আরও জানান, রাজ্য পুলিশের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল এই বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি কোনো প্রমাণ প্রকাশ করবেন না। তবে ১০ সেপ্টেম্বর তিনি সমস্ত তথ্য জনসমক্ষে তুলে ধরবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁর কথায়, “সেই দিন দেশের মানুষ জানবেন, কীভাবে একটি নির্দিষ্ট জলবায়ু লবির হয়ে দেশের বিরুদ্ধে কাজ করা হচ্ছে।”
এই প্রসঙ্গে গৌরব গগৈ অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ২০১৩ সালে তিনি ব্যক্তিগত কারণে পাকিস্তান সফরে গিয়েছিলেন, যখন তার স্ত্রী সেখানে কর্মরত ছিলেন একটি আন্তর্জাতিক জলবায়ু প্রকল্পে। তিনি জানান, সেই সময় তিনি সংসদ সদস্যও ছিলেন না।
এই নিয়ে হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, “গগৈয়ের পাকিস্তান সফর তাঁর স্ত্রীর কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। তার স্ত্রী তখন ভারতে ছিলেন। পাকিস্তান সফর ছিল গগৈয়ের একান্ত নিজস্ব সিদ্ধান্ত।” বিদেশি নাগরিকত্বের ইস্যু তুলে আরও কটাক্ষ করে হিমন্ত বলেন, “গৌরব গগৈয়ের পরিবারে চারজনের মধ্যে তিনজনই ভারতীয় নাগরিক নন। তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী। যাদের পরিবারে দেশীয় নাগরিক সংখ্যা কম, তাঁরা কখনোই প্রকৃত দেশপ্রেমিক হতে পারে না।”
এই ইস্যুকে ঘিরে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকেও নিশানা করেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি বলেন, “১০ সেপ্টেম্বরের পর রাহুল গান্ধী নিশ্চয়ই অনুতপ্ত হবেন গগৈকে লোকসভায় কংগ্রেসের ডেপুটি লিডার ও অসম কংগ্রেস সভাপতি পদে নিয়োগ করার জন্য।” উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই গৌরব গগৈকে একের পর এক ইস্যু নিয়ে আক্রমণ শানিয়ে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তবে এবার তাঁর অভিযোগের মাত্রা দেশীয় রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিল।