অঙ্কিতা ভণ্ডারী হত্যা মামলায় তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করে আজীবন কারদাণ্ডের নির্দেশ শোনাল উত্তরাখণ্ডের আদালত। তিনজনের মধ্যে পুলকিত আর্য আছেন বলেও জানা যাচ্ছে। যিনি প্রাক্তন বিজেপির প্রভাবশালী নেতা বিনোদ আর্যের ছেলে। আর এই রায় সামনে আসার পরেই আদালতের সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়ে অঙ্কিতা ভণ্ডারীর পরিবার।
উত্তরাখণ্ডের পাউরি জেলার একটি রিসোর্টে রিসেপশনিস্ট হিসাবে কর্মরত ছিলেন অঙ্কিত। ২০২২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি । দীর্ঘ ছয়দিন পর ১৯ বছরের অঙ্কিতার দেহ উদ্ধার হয় উত্তরাখণ্ডের চাল্লি খাল থেকে। একেবারে পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ আধিকারিকরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় সে রাজ্যে। ঘটনায় প্রাক্তন বিজেপি নেতার ছেলে পুলকিত আর্য সহ তাঁর বন্ধুরা খুন করেছে বলে অভিযোগ ওঠে।
বলে রাখা প্রয়োজন, অঙ্কিতা ভাণ্ডারী যে রিসর্টে রিসেপশনিস্ট হিসাবে কর্মরত ছিলেন, সেটি ছিল পুলকিতের। এরপরেই এই বিষয়ে স্থানীয় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন অঙ্কিতার বাবা। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাক্তন বিজেপি নেতার ছেলে সহ অঙ্কিত গুপ্ত, সৌরভ ভাস্করকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও এই ঘটনায় তৎকালীন বিজেপি নেতা বিনোদ আর্যের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ওঠে। যা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়।
এই ঘটনার পরেই অঙ্কিতা ভণ্ডারী হত্যা মামলায় বিশেষ সিট গঠনের নির্দেশ দেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী। একই সঙ্গে বিনোদ আর্যকেও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ঘটনার তদন্তে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। জানা যায়, ওই রিসর্টে যে সমস্ত পর্যটকরা আসত তাঁদের সঙ্গে অঙ্কিতাকে ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য জোর করা হত। আর এই পুরো বিষয়টির সঙ্গে জড়িত খোদ পুলকিত। আর এহেন কাজে ১৯ বছরের ওই তরুণী রাজি না হওয়াতেই নৃশংসভাবে খুন করা হয় বলে অভিযোগ।
সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দীর্ঘ সময় ধরে এই মামলার তদন্ত চলে। সিটের তরফে আদালতে ৫০০ পাতার চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। যেখানে প্রায় ৭ জনের সাক্ষী ছিল। সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখার পর উত্তরাখণ্ড আদালত পুলকিত আর্য, অঙ্কিত গুপ্ত, সৌরভ ভাস্করকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং আজীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ শোনায়। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।