শেখ হাসিনা জামানার পরবর্তী বাংলাদেশে নির্বাচন কবে হবে সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে সুর ছড়িয়েছে খালেদা জিয়ার দল।এবার দেশের সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলই চলতি বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় বলে দাবি করেছেন বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গী ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।
মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্ব থাকা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছ থেকে নির্বাচনের সুস্পষ্ট তথ্য না পাওয়ায় বারবার হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএনপি। সংস্কার নিয়ে সময় কাটানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।তাঁর দাবি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।আর ডিসেম্বরের মধ্যেই যাতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তার প্রস্তুতি নিতে নতুন প্রজন্মসহ দেশবাসীর প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
তারেক রহমান সহ বিএনপির বিভিন্ন নেতা যখন দ্রুত এবং আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের দাবি তুলছেন তখন জাপান সফরে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর নির্ধারিত নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচনের কথা বলেছেন।পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ অন্য কোনও দল নয় কেবলমাত্র একটি দলই বারবার আগাম বা ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতেই সামনে এল ১২ দলীয় জোটের বক্তব্য। শুক্রবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ১২ দলীয় জোটের নেতারা জানিয়েছেন – “কেবল একটি দলই নয়, দেশের সব গণতন্ত্রপন্থি দলগুলো স্পষ্টভাবে গত নয় মাস ধরে ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলে এসেছে। বরং তিনি নিজেই কিছু মৌলবাদী, জনসমর্থনহীন, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজনৈতিক দলকে পাশে নিয়ে নির্বাচনের প্রশ্নটিকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করেছেন।” সময় নিউজ এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী ১২ দলের জোটের নেতারা আরও বলেন, “১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে দফায়-দফায় এই বছরের জুনের মধ্যেই নির্বাচনের কথা বলেছি। দেশের প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলগুলো সভা, সমাবেশ, সেমিনার, বক্তব্য, বিবৃতি এবং প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বারবার এই কথা উচ্চারণ করেছেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূস হয়তো ভুলে যাচ্ছেন তিনি কথার মারপ্যাঁচ দিয়ে তার গদি রক্ষা করতে পারবেন না। পদত্যাগের নাটক করেও পারবেন না। বাংলাদেশের জনগণ তার নাটক বুঝে গেছে।” এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে দেশকে মহাসংকটের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান ১২ দলের জোট নেতারা।
দৈনিক ইত্তেফাক অনুযায়ী এই বিবৃতিতে সই করেছেন ১২ দলীয় জোট প্রধান ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপার) সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, লেবার পার্টি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান শামসুদ্দীন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রকিব, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এম এ মান্নান, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দল (পিএনপির) চেয়ারম্যান ফিরোজ মো. লিটন।
এদিকে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের এক ব্যক্তিই চান না এবং তিনি মুহাম্মদ ইউনূস বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। শুক্রবার সকালে জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার এক বক্তব্যের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন। মুহাম্মদ ইউনূস বিদেশে বসে দেশের সম্পর্কে বদনাম করছে বলে অভিযোগ তাঁর।
Leave a comment
Leave a comment
