বর্তমানে চন্দ্রবাবু নাইডু ও বিল গেটস স্বাস্থ্য খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে একসঙ্গে কাজ করছেন। কিন্তু বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ও মাইক্রোসফটের সহ প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস একসময় চন্দ্রবাবু নাইডুর সঙ্গে দেখা করতেই চাননি!
এনডিটিভিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এমনই চাঞ্চল্যকর সত্যি সামনে আনলেন হায়দরাবাদকে তথ্যপ্রযুক্তি নগরীতে রূপান্তর করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নেওয়া অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু। যদিও বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ও মাইক্রোসফট সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এখন তাঁর “ভাল বন্ধু” বলে জানান তিনি।
১৯৯০-এর দশকের ঘটনা! সেই সময় চন্দ্রবাবু অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, আর বিল এসেছিলেন দিল্লিতে। তখনই চন্দ্রবাবু তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। কিন্তু গেটসের দফতর থেকে জানানো হয়, তিনি রাজনীতিবিদদের সঙ্গে দেখা করবেন না। নাহ্, হাল ছেড়ে দেননি চন্দ্রবাবু। তিনি জানান, “আমি তাঁকে জানাই, আমি কিছু আইডিয়া শেয়ার করতে চাই”। তার পর বিল তাঁকে একটি ককটেল পার্টিতে যোগ দেওয়ার কথা বলেন। যদিও চন্দ্রবাবু বলেন, “সেই সময় ককটেল পার্টিতে যাওয়া সমাজ বিরুদ্ধ ছিল। তাই আমি না করি।”
শেষমেশ অনেক অনুরোধের পর বিল গেটস ১০ মিনিট সময় দেন চন্দ্রবাবু নাইডুকে। আর সেইটুকু সময় কাজে লাগান তিনি। এক সপ্তাহ ধরে প্রেজেন্টেশন তৈরির জন্য পরিশ্রম করেছিলেন চন্দ্রবাবু। সেই সাক্ষাতে ভারত এবং তথ্যপ্রযুক্তির সম্ভাবনার কথা বিল গেটসের কাছে ব্যাখ্যা করেছিলেন তিনি। চন্দ্রবাবুর প্রেজেন্টেশন দেখে মুগ্ধ হয়ে যান বিল গেটস, সহায়তা করার কথাও বলেন। তিনি বলেন, “আমার জন্য কিছু করতে হবে না। আপনি শুধু ভারতের প্রতি বিশ্বাস রাখুন, ভারতীয়দের কথা ভুলে যাবেন না।”
তখনই চন্দ্রবাবু নাইডু বিল গেটসকে পরামর্শ দেন, সিয়াটল-এর বাইরে যদি মাইক্রোসফট কোনও ডেভেলপমেন্ট সেন্টার করতে চায়, তাহলে যেন হায়দরাবাদের কথা ভাবা হয়। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, ১৯৯৮ সালে সেটাই বাস্তব হয়। সাক্ষাৎকারের জন্য মাত্র ১০ মিনিট ধার্য করা হলেও সেই সাক্ষাৎকার চলেছিল ৪৫ মিনিট ধরে। পরে নাইডু সিয়াটলেও যান, সেখানে আরও বৈঠক হয়। বিল গেটস এবং চন্দ্রবাবু নাইডু একসঙ্গে একটি সাংবাদিক বৈঠকও করেন। তবে এখন দুজনে যে বেশ ভালো বন্ধু সেকথাও জানিয়েছেন চন্দ্রবাবু নাইডু। আগামী দিনে বিল গেটসের হাত ধরে স্বাস্থ্যখাতকে পুরোপুরি অনলাইনে নিয়ে আসা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে রিয়েল-টাইম মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানান তিনি। আগামী দিনে এই উদ্যোগ স্বাস্থ্য খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে আশাবাদী নাইডু।