বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর ১ জুন পালন করা হয় ‘বিশ্ব দুধ দিবস’। কিন্তু চলতি বছরে এই দিবসের নাম নিয়েই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। পশু অধিকার রক্ষা সংগঠন পিপল ফর দ্য এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অফ অ্যানিমেলস। আন্তর্জাতিক খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এফও’কে চিঠি লিখে দাবি করেছে, এই দিবসের নাম বদলে রাখতে হবে ‘বিশ্ব গো-স্তন্য নিঃসরণ দিবস’।
সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, ‘দুধ’ শব্দটি দিয়ে প্রকৃত সত্য লুকোনো হচ্ছে। তারা বলেছে, “যে তরল পদার্থকে আমরা দুধ বলে জানি, সেটি আসলে গরুর স্তনগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত পদার্থ, যা প্রাকৃতিকভাবে বাছুরদের খাওয়ার জন্যই তৈরি হয়।”
পেটা-র প্রোগ্রাম বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট এলিসা অ্যালেন বলেন, “শুধুমাত্র গরু বলেই কিন্তু দুধ দেয়না গরুরা। ওরা দুধ দেয় কারণ ওরা মা। আর এই দুধ আসলে ওদের বাচ্চাদের জন্য তৈরি।” চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, দুধ উৎপাদনের ফলে বাছুরদের তাদের মায়ের কাছ থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়। বঞ্চিত করা হয় প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও মাতৃস্নেহ থেকে। “গরুর এই দুধ মানবজাতির জন্য নয়”, এমনই দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।
ওই সংস্থার আরও অভিযোগ, বর্তমানে দুগ্ধ খামারগুলিতে গরুগুলিকে বারবার গর্ভবতী করে তোলা হয়, শুধুমাত্র ব্যবসার জন্য ক্রমাগত দুধ সংগ্রহ করার জন্য । এর ফলে গরুর স্তনে সংক্রমণ (মাস্টাইটিস) হয়, যা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। এমনকি অনেক সময় এক লিটার দুধে ৪০০ মিলিয়ন পর্যন্ত ‘সোমাটিক সেল’ অর্থাৎ পূজকণিকা বা পুঁজের উপাদানও থাকতে পারে বলে তারা জানিয়েছে।
পরিবেশ দূষণের দিক থেকেও দুগ্ধ শিল্পকে দায়ী করেছে ওই সংস্থা। তাদের মতে, দুগ্ধ শিল্প থেকে বিপুল পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়, যা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী। তবে এই প্রথমবার নয়, আগেও সংস্থাটি কেমব্রিজ অভিধানে ‘র্যাট’ শব্দের সংজ্ঞা পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছিল। তাদের মতে, ইঁদুরকে নিয়ে প্রচলিত নেতিবাচক ধারণা প্রজাতিভেদমূলক বৈষম্য তৈরি করে। এখন দেখার সত্যি বিশ্ব দুগ্ধ দিবসের নাম পরিবর্তন হয় কিনা।