সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা মেট্রো নেটওয়ার্কের এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদা পর্যন্ত কমিশন অফ রেলওয়ে সেফটি (সিআরএস)-এর ছাড়পত্র ইতিমধ্যেই এসে গেছে৷ কিন্তু কবে এই অংশে মেট্রো পরিষেবা চালু হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি।
সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এখনও সবুজ সংকেত মেলেনি। তবে কি এই অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ? যদিও কলকাতা মেট্রোরেলের জেনারেল ম্যানেজার পি উদয় রেড্ডি জানিয়েছেন যে, “শিয়ালদহ ও এসপ্ল্যানেডের মধ্যে কাজ শেষ৷ কিন্তু সিআরএস কিছু ‘অবজার্ভেশন’ বা পরামর্শ দিয়েছেন। সেইসব কাজগুলোও শেষ করতে হবে। এছাড়াও যাত্রী সুরক্ষার বেশ কিছু কাজ করতে হবে। তাই সব কাজ শেষ হয়ে গেলেই চালু হয়ে যাবে এই অংশের পরিষেবা। বাণিজ্যিক ভাবে এই অংশটি চালু হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। সব কাজ আগে শেষ হবে তারপরেই যাত্রী পরিষেবা চালু হবে ।”
প্রসঙ্গত, গত ২৭ এপ্রিল ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদা পর্যন্ত ২.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গপথের পরিদর্শন করে যান কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি সুমিত সিঙ্ঘল। তারপরেই ২৮ এপ্রিল রাতে সিআরএস-এর পক্ষ থেকে ওই অংশে শর্তসাপেক্ষে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিষেবা চালু করার অনুমতি মেলে। যদিও এরপর একমাস পেরোলেও এখনও এই অংশের পরিষেবা শুরু হয়নি। কবে শুরু হবে সেই বিষয়টিও স্পষ্ট নয় ৷ অথচ বেশ কয়েকটি সপ্তাহান্তে গ্রিন লাইন ১ এবং গ্রিন লাইন ২-এর পরিষেবা বন্ধ রেখে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ব্যবস্থার কাজ চলেছে। যদিও কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল (CBTC) সিস্টেমের পরীক্ষা-নীরিক্ষার কাজ সিআরএস-এর পরিদর্শনের আগেই অনেকটা শেষ হয়ে গিয়েছিল। গ্রিন লাইনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সিগন্যালিংয়ের কাজ শেষ হলেও এখনও বাকি রয়েছে বেশকিছু কাজ । কারণ সিআরএস-এর সাত পাতার রিপোর্টেই উল্লেখ ছিল যে, কোন কাজগুলি বাকি রয়েছে এবং দ্রুত সেগুলি করে ফেলতে হবে । যদিও সেগুলি এমন অপরিহার্য কাজও নয় যে, যেগুলি না শেষ করলে বাণিজ্যিকভাবে পরিষেবা চালানো যাবে না ।
এখানে বলে রাখা ভালো যে, অরেঞ্জ লাইনে কবি সুভাষ থেকে রুবি মোড় পর্যন্ত মেট্রোর লাইন পুরোপুরি তৈরি হয়েও পড়েছিল অনেকদিন। এই অংশে প্রথমবার সিআরএস-এর ছাড়পত্র পাওয়ার পর আবারও ছয় মাস পরে সেই সার্টিফিকেট নবীকরণ করানো হয়েছিল। তারপর ২০২৪ সালের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শহরে এসে তিনটি রুটের উদ্বোধন করেন, যার মধ্যে ছিল অরেঞ্জ লাইনের কবি সুভাষ থেকে রুবি, গ্রিন লাইন টু-এর এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া ময়দান এবং পার্পেল লাইনের তারাতলা থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত।
উল্লেখযোগ্য, কলকাতা মেট্রো রেলের ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর শিয়ালদা থেকে এসপ্ল্যানেডের মধ্যে বাণিজ্যিক পরিষেবা চালু হলে জুড়ে যাবে গ্রিন লাইন ১ এবং গ্রিন লাইন ২ । অর্থাৎ তখন একটি মেট্রোতেই পৌঁছে যাওয়া যাবে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদা বা এসপ্ল্যানেড। আবার এসপ্ল্যানেড থেকে সোজা হাওড়া ময়দান, অর্থাৎ এক ট্রেনেই পৌঁছনো যাবে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত। এই ১৬.৬ কিমি মেট্রো পথ খুলে গেলে লক্ষ লক্ষ যাত্রী উপকৃত হবেন। এই নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে উৎসাহও তুঙ্গে।