ইজরায়েল আর ইরানের লড়াইয়ের পঞ্চম দিনে তেহরান খালি করার হুঁশিয়ারি দিয়ে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইজরায়েলের লাগাতার হামলার জবাবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি থেকে বেড়িয়ে আসার হুমকি দিয়েছে তেহরান। এমন পরিস্থিতিতে কানাডায় জি ৭ বৈঠক কাটছাঁট করে নির্ধারিত সময়ের এক দিন আগেই দেশে ফিরছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।ফিরেই জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠক ডাকার পরিকল্পনা করছেন ট্রাম্প। ইরান, ইজরায়েল লড়াইয়ের বিরতির জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের পদক্ষেপকে ইতিবাচক বলে বর্ণনা করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো। জি৭ সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্প জানান, “… হয় একটা চুক্তি হবে, না হলে কিছু একটা ঘটবে। … আর ইরান যদি এখনও না বোঝে, তাহলে ওরা বড় ভুল করছে।”
ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, “ইরানকে আমি যে ‘চুক্তি’ সই করতে বলেছিলাম, তারা তা করলে আজকের এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটত না। সোজাকথায়, যা আমি অনেকবার বলেছি ইরান পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না! সবাই এখনই তেহরান খালি করে দিন!”
ক্রমশই জটিল আকার ধারণ করছে ইজরায়েল আর ইরানের যুদ্ধ পরিস্থিতি। পশ্চিম এশিয়ায় এই হানাহানি এখনই বন্ধ না হলে তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির অনেক কাছাকাছি পৌঁছে গেছে এই আশঙ্কা থেকেই তেহরানকে বাগে আনতে চাইছে আমেরিকা ও তা বন্ধু দেশ ইজরায়েল। ট্রাম্প সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন যে তিনি ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে ৬০ দিন সময় দিয়েছিলেন, কিন্তু কোনও চুক্তি না হওয়ায় সেই সময়সীমা শেষ হয়েছে।অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুও ৬০ দিনের সময়ের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, “আমরা ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির হুমকি দূর করবই।…” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ওমানে ১৫ জুন বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে ইজরায়ের এই হামলার মধ্যে তারা তারা আলোচনায় বসতে পারবে না। তবে জানা যাচ্ছে যে ইরান ওমান, কাতার এবং সৌদি আরবের মাধ্যমে ট্রাম্পকে এই অনুরোধ করেছে যাতে তিনি নেতানিয়াহুকে হামলা থামাতে সম্মত করান। পরিবর্তে, ইরান পারমাণবিক আলোচনায় নমনীয়তা দেখাতে রাজি হবে। অর্থাৎ হুঁশিয়ারির পাশাপাশি এই লড়াই থামাতে ট্রাম্পের অবস্থান কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার সকালেই তেহরানে শোনা গেছে বিস্ফোরণের শব্দ। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। রাজধানী থেকে প্রায় ৩২০ কিলোমিটার দূরের নাতাঞ্জ পারমাণবিক ক্ষেত্রে ইজরায়েলি হামলার শঙ্কায় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সক্রিয় করা হয়। এদিকে ইরান ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোয় মঙ্গলবার রাতের পর ইজরায়েলের তেল আবিবে বার বার বেজে ওঠে সতর্কতা সাইরেন। গত পাঁচ দিনে ইরানে ইজরায়েলের হামলায় ২২৪ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক। ইজরায়েল জানিয়েছে, তাদের ২৪ জন অসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, এবং প্রায় ৩,০০০ মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
Leave a comment
Leave a comment
