তিন বছর ধরে বন্ধ থাকা কেন্দ্রের ‘মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ রোজগার নিশ্চয়তা প্রকল্প’ যা ১০০ দিনের কাজ নামে সমধিক পরিচিত, আবার শুরু করতে হবে। এই মর্মে কেন্দ্রীয় সরকারকে ১ আগস্ট থেকে প্রকল্প পুনরায় চালুর নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ রাখা আর চলবে না। পাশাপাশি আদালতের কড়া পর্যবেক্ষণ, আগে যে ভাবে দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল, এবার প্রকল্প চালুর পর সেগুলি যেন আর না ঘটে, তার দায় থাকবে রাজ্য ও কেন্দ্র উভয়ের উপরেই।
২০১৯ সাল থেকে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে রাজ্য জুড়ে ১০০ দিনের কাজ সংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে। অনেক জেলায় প্রকৃত উপভোক্তারা কাজ পাননি, আবার কোথাও কাজ না করেও টাকাপয়সা পেয়েছেন এমন অভিযোগ উঠেছিল। তার পরই কেন্দ্র রাজ্যে প্রকল্পের টাকা আটকে দেয়। কেন্দ্র থেকে একাধিক দল এসে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ঘুরেও দেখে। তার জেরে গত তিন বছর বাংলায় বন্ধ এই প্রকল্প।
এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে তৃণমূল পাল্টা কেন্দ্রের মোদী সরকারের উপর চাপ বাড়াতে থাকে। অভিষেক দিল্লিতেও কর্মসূচি নেন। বিজেপিকে বাংলা বিরোধী হিসাবে তুলে ধরে তৃণমূল। রাজনৈতিক লড়াইয়ের পাশাপাশি চলছিল আইনি লড়াইও।
এই অবস্থায় মামলাকারীরা হাইকোর্টের দারস্থ হন। সেই মামলার রায়েই আদালত জানিয়ে দিয়েছে, ১ আগস্টের মধ্যে প্রকল্প চালু না হলে তা আদালতের আদেশ লঙ্ঘন হিসেবে ধরা হবে।
আদালত আরও বলেছে, গোটা রাজ্যের মানুষের কাছে যাতে এই প্রকল্পের পরিষেবা পৌঁছয়, তার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। শুধু একাধিক জেলায় সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। একটি বা দু’টি জেলায় দুর্নীতির অভিযোগে গোটা রাজ্যকে বঞ্চিত করা যাবে না বলেও কেন্দ্রকে জানিয়ে দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। প্রয়োজনে বিতর্কিত জেলাগুলিকে বাদ রেখে রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ শুরু করতে হবে। তৃণমূলের দাবি এই খাতে রাজ্যের বকেয়া রয়েছে ২ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা। কেন্দ্র রাজনৈতিক স্বার্থে সেই ন্যায্য পাওনা আটকে রেখেছে বলেও অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
এই রায় সামনে আসতেই রাজ্য প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, কেন্দ্র টাকা ছাড়লেই রাজ্যে দ্রুত ১০০ দিনের কাজ চালু হয়ে যাবে।