মিথ্যা গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করায় উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের একটি আদালত সম্প্রতি ২৪ বছর বয়সী এক মহিলাকে ৭ বছর ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ২.১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে। আদালতের কাছে প্রমাণিত হয় যে, মামলাকারী রেখা দেবী উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে দু’জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা এফআইআর করেছিলেন।
বিশেষ বিচারক বিবেকানন্দ শরণ ত্রিপাঠী তাঁর ৪২ পাতার রায়ে জানান, রেখা দেবী ওই দুই পুরুষের মানহানি ও সামাজিক অপমানের উদ্দেশ্যে এই মামলা করেন। তাঁর মূল লক্ষ্য ছিল রাজেশের স্ত্রীকে সামাজিকভাবে অপদস্থ করা। এই অভিযোগের ফলে অভিযুক্তরা প্রায় তিন মাস জেলে থাকেন, যার মধ্যে এক জন, ভূপেন্দ্র, মামলার শুনানির মাঝেই ২০২৪ সালের ৩ জুলাই মাত্র ২৯ বছর বয়সে মারা যান।
আদালতের ভাষায়, “মিথ্যা ধর্ষণের অভিযোগ একজন নির্দোষ পুরুষের আত্মসম্মান ও ভবিষ্যৎ ধ্বংস করতে পারে। এমন অভিযোগের ফলে মানসিক অবসাদ, সমাজ থেকে বিচ্ছিন্নতা এবং কর্মসংস্থানের ক্ষতি পর্যন্ত হতে পারে।” বিচারক রামচরিতমানস-এর একটি শ্লোক উল্লেখ করে বলেন, ‘আজসী’ অর্থাৎ, যে সমাজে অপমানিত, সে জীবিত থেকেও মৃতের সমান।
আদালত পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে, যদি কেউ বার বার এমন গুরুতর অভিযোগ (ধর্ষণ বা গণধর্ষণ) করেন, তাহলে পরবর্তী এফআইআরে আগের অভিযোগগুলির তথ্য উল্লেখ করতে হবে। সেই সঙ্গে, এফআইআর যাচাইয়ের ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের পরামর্শও দিয়েছে আদালত, যাতে আগের মামলার ইতিহাস দ্রুত পাওয়া যায়।
বিচারক আরও বলেন, “POCSO, SC/ST, পণপ্রথা বিরোধী আইন ইত্যাদি বিশেষ আইনের অপব্যবহার সমাজে প্রকৃত ন্যায়বিচার পাওয়ার রাস্তাকে কঠিন করে তুলছে।”