ভারত-সহ বিশ্বের একাধিক দেশ চাঁদ নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে। এমনকী চাঁদে আবার মানুষ পাঠাতে নেওয়া হচ্ছে প্রস্তুতিও। আর এর মধ্যেই চাঁদের ধুলিকনা নিয়ে চমকপ্রদ তথ্য সামনে এনেছেন একদল গবেষক।
সিডনির (ইউটিএস) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউটিএস) গবেষকরা এ বিষয়ে সমীক্ষা চালিয়েছেন। সমীক্ষা বলছে, চাঁদের ধুলো মানুষের ফুসফুসের কোষের জন্য পৃথিবীর ধুলোর তুলনায় কম ক্ষতিকারক! এমনকী এ নিয়ে আগের ধারণা ভুল বলেও দাবি ওই গবেষক দলের। এখানেই শেষ নয়, পৃথিবীর বায়ু দূষণের তুলনায় চাঁদের ধুলো অনেক কম বিষাক্ত বলেও দাবি। আর এই সমীক্ষা আগামিদিনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশেষ করে চিন, ভারত, রাশিয়া এমনকী আমেরিকা চাঁদ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা চালাচ্ছে। পৃথিবীর বাইরে চাঁদের মাটিতে উপনিবেশ-সভ্যতা স্থাপনের চেষ্টাও চালানো হচ্ছে। তোড়জোর চলছে মানুষ পাঠানোর। সেখানে দাঁড়িয়ে এই গবেষণা নয়া দিগন্ত খুলে দেবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। ‘লাইফ সায়েন্সেস ইন স্পেস রিসার্চ’-এ এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাগারে মানুষের ফুসফুসের কোষের উপর চন্দ্র ধুলোর প্রভাব নিয়ে একটি পরীক্ষা চালানো হয়।
এই সমীক্ষার অন্যতম প্রধান গবেষক মাইকেলা বি. স্মিথ জানিয়েছেন, দীর্ঘ গবেষণায় একাধিক তথ্য। চাঁদের ধুলো শ্বাসনালীতে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে, তবে এটি সিলিকা ধুলোর মতো উপাদান রয়েছে। ফলে দীর্ঘস্থায়ী, দীর্ঘমেয়াদী রোগের কোনও ঝুঁকি তৈরি করবে না। তাঁর কথায়, গবেষণায় দেখা গিয়েছে চাঁদের ধুলো শারীরিক জ্বালাপোড়া তৈরি করলেও পৃথিবীতে তৈরি দুষণ থেকে কম ক্ষতি করে। এমনকী শরীরে কোষের তেমন ক্ষতিও করতে পারেনি।
এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে অ্যাপলো লুনার মিশনের প্রসঙ্গের কথা তুলে ধরেন। মহাকাশচারীরা যখন চাঁদের মাটিতে পা রেখেছিলেন, সেই সময় সেখানকার ধুলোকনা অন্যতম চিন্তার কারণ ছিল। বিশেষ করে মহাকাশচারীদের স্বাস্থ্যের দিক থেকে। গবেষক দলের প্রধান স্মিথ জানান, অ্যাপোলো মিশনের সময় মহাকাশচারীদের স্পেসসুটে আটকে থাকা সূক্ষ্ম ধুলোকনা কেবিনে থাকা বাতাসে মিশে যায় এবং পরে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মহাকাশচারীদের শরীরে ঢুকে যায়। স্মিথের দাবি, এর ফলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। শুরু হয় ব্যাপক হাঁচি। এমনকি চোখেও জ্বালাও শুরু হয়ে গিয়েছিল।
আরও জানা গিয়েছে যে চাঁদের ওই ধুলিকনা কোনও কেমিক্যাল ড্যামেজ করে না। নাসা বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।
