একেবারে পরিকল্পনা করে ইরানের উপর হামলা চালায় ইজরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ অভিযানে তেহরানের একের পর পরমাণু ঘাঁটি, ব্যালেস্টিক মিসাইল লঞ্চার, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে টার্গেট করা হয়। এমনকী প্রথমদিনের হামলাতেই বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীর মৃত্যু পর্যন্ত হয়। মৃত্যু হয় সেনা শীর্ষ আধিকারিকদেরও। যা বড়সড় ধাক্কা ছিল ইরানের কাছে।
এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত চলছে। সংঘাত যে দীর্ঘ হবে তা আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল বলে মত বিশ্লেষকদের। আর সেই কারণে ‘রাইজিং লায়ন’-এর প্রস্তুতির মধ্যেই ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ইরানের অভ্যন্তরে বিশেষ এক অভিযান চালায়। যার নাম ‘অপারেশন নার্নিয়া’।
এক ঝটকায় একের পর এক মৃত্যু
গত ১৩ জুন ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ অভিযান শুরু করে ইজরায়েল। আর এই অভিযানে একাধিক শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীর যেমন মৃত্যু হয়। তেমনই ইরানের সেনাবাহিনীর শীর্ষ আধিকারিকদেরও মৃত্যু হয়। বিশ্লেষকদের কথায়, একেবারে নিখুঁত টার্গেটে যুদ্ধের প্রথমদিনেই মৃত্যু মিছিলের সাক্ষী থাকে তেহরান। আর পিছনে মোসাদের বড় ভূমিকা আছে বলেই দাবি। গোয়েন্দা অপারেশনের তথ্যের ভিত্তিতেই এই সামরিক অভিযান চলে।
‘অপারেশন নার্নিয়া’ সফল
ইরানে কর্মরত পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের একেবারে টার্গে করে ইজরায়েল। জেরুজালেম পোস্ট অনুযায়ী, এই বিষয়ে দীর্ঘ প্রস্তুতি চলে। দীর্ঘসময় মোসাদ ইরানের মাটি থেকে পরমাণু বিজ্ঞানীদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করে। আর তা অপারেশন নার্নিয়ার মাধ্যমেই চলে। আর সেই তথ্য আইডিএফের পাওয়ার পরেই একেবারে সঠিক ভাবে হামলা হয় বলে খবর। সে দেশের এক সংবাদমাধ্যমের খবরকে উদ্ধৃত করে আজতকের প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সমস্ত বিজ্ঞানীকে তাদের বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় টার্গেট করা হয়েছিল।
শীর্ষ এক আইডিএফ আধিকারিক এই বিষয়ে বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, অভিযানের পরিকল্পনা করার জন্য গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিমান বাহিনীকে কাজে লাগানো হয়েছিল। ওই আধিকারিকের কথায়, বিষয়টি খুব একটা সহজ ছিল না। এরপর টার্গেট ব্যাঙ্ক তৈরির কাজ শুরু হয়। যদিও সেটি করাটাও ছিল খুব চ্যালেঞ্জের। আইডিএফ আধিকারিকের দাবি, ইরানে একটি গোয়েন্দা ঘাঁটি এবং বিমান বাহিনীর জন্য ঘাঁটি তৈরি হয়। সেই মতো প্রত্যেক টিমকে মিশন দেওয়া হয়।
পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা, কমান্ড সেন্টার এবং রাডার সিস্টেম ধ্বংস করা ছিল এই মিশনের অন্যতম টার্গেট। ওই আধিকারিকের কথায়, এরপরেই অপারেশন ‘রাইজিং লায়ন’ শুরু হয়। ওই আধিকারিকের কথায়, সবার আগে ‘টার্গেট লিস্ট’ তৈরি করা হয়। তালিকার শীর্ষে রাখা হয় ‘খতরনাক’ বিজ্ঞানীদের নাম। এরপর সে দেশে মোসাদ তথ্য জোগার করতে শুরু করে।