বিজেপির আইটি সেলের প্রধান তথা দলের তরফে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা অমিত মালব্যের একটি টুইট নিয়ে তোলপাড়। মঙ্গলবার একটি খবরের স্ক্রিনশট শেয়ার করে অমিত দাবি করেছিলেন, এনআইএ নাকি কলকাতার কসবায় হানা দিয়ে ৩ আইএসআইএস জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে। আইটি কর্মীর ছদ্মবেশে তারা সেখানে থাকছিল। শহরের একেবারে কেন্দ্রস্থলে এমন আইএস জঙ্গি গ্রেফতারির ঘটনায় সাড়া পড়ে যায়। অমিত সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, কলকাতা পুলিশের কর্মদক্ষতা নিয়ে। বুধবার অমিতের তোলা অভিযোগের জবাব দিল কলকাতা পুলিশ। টুইট করে লালবাজার জানিয়ে দিল, এ রকম কোনও ঘটনাই ঘটেনি। পুরোটাই মিথ্যে।
মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ একটি টুইট করেন মালব্য। সেখানে একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে তিনি দাবি করেন, কলকাতার কসবা থেকে তিন জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ এবং দিল্লি পুলিশ। তিনি লেখেন, ‘কলকাতার কসবা এলাকায় আইটি কর্মীর ছদ্মবেশে একটি ফ্ল্যাটে আত্মগোপন করে ছিল তিন জঙ্গি।’ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের যে নেটওয়ার্ক, ওই তিন জন তাতে যুক্ত ছিল বলে দাবি মালব্যের। দ্রুত তাদের গ্রেফতার করার জন্য মালব্য ধন্যবাদ জানান এনআইএ এবং দিল্লি পুলিশকে। একই সঙ্গে মালব্য প্রশ্ন তোলেন, পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় সন্ত্রাসবাদী গতবিধি বাড়ছে কেন? কী ভাবে সবার পর এগুলি নিয়ে জানতে পারছে রাজ্য পুলিশ? বিজেপি আইটি সেলের প্রধান আর লেখেন, বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গিরা স্থানীয় প্রশাসনের মদতে আধার কার্ড, ভোটার আইডি বার করে ফেলছে। কলকাতার কেন্দ্রে এত বড় একটি দেশ বিরোধী কাজ চলছিল, কিন্তু পুলিশ টের পেল না?
মালব্যের এই টুইটের পরই তোলপাড় পড়ে যায়। শহরের মধ্যে আইএস জঙ্গি আত্মগোপন করে বসে আছে, আর পুলিশ জানেই না, এমন হলে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। তার অপর এনআইএ এবং দিল্লি পুলিশ লালবাজারকে না জানিয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেল, আর টেরই পেল না কলকাতা পুলিশ! ফলে লালবাজারের উপরও চাপ বাড়ে। মালব্যের টুইটের ২৪ ঘণ্টা পর কলকাতা পুলিশ পাল্টা টুইট করল। তাতে দাবি করা হল, কসবা থেকে আইএস জঙ্গি গ্রেফতারির খবর সম্পূর্ণ ভুয়ো। এনআইএ বা অন্য কোনও এজেন্সি এই ধরনের কোনও গ্রেফতার করেনি। জনগণকে এ রকম ভিত্তিহীন ভুয়ো খবর থেকে সতর্ক করা হয়েছে। যারা এ ভাবে ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে লালবাজার। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, মালব্যের দাবি যদি সত্যি হয়, তাহলে ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও কেন এনআইএ এ বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিল না?
এর আগেও মালব্যের একাধিক টুইটের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। টুইটার তাঁকে সাবধান করেছে, তাঁর টুইট ফ্ল্যাগও করেছে। নির্দিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নানা ভুয়ো খবর ছড়ানোর ঘটনাতেও তাঁর দিকে আঙুল তোলেন অনেকে। যদিও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পেয়েছেন কখনও, তা শোনা যায়নি। এ বার কলকাতায় আইএস জঙ্গি ধরা পড়া নিয়ে আবার ভুয়ো খবর দিলেন বিজেপির নেতা। পুলিশ কি তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে?