সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বা মহার্ঘভাতা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে দেওয়া হবে কিনা এই অনিশ্চয়তার মধ্যে ফের নতুন জটিলতা। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশক্রমে আগামী পয়লা জুলাইয়ের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ পাবলিক ডোমেইনে প্রকাশ করার কথা রাজ্য সরকারের। বুধবার থেকেই ২০১৫ সালে অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের সভাপতিত্বে গঠিত ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ ধাপে ধাপে প্রকাশ করার কাজ শুরু করেছে নবান্ন। সেই সুপারিশ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে বাধ্য নয় রাজ্য সরকার বলে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে তেমনি বলা হয়েছে তহবিল বুঝে ডিএ বরাদ্দ করবে রাজ্য সরকার।
ষষ্ঠ বেতন কমিশন নিয়ে জল ঘোলা হয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারী ও কর্মচারী সংগঠনগুলির মধ্যে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ২৬ জুলাই বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ দেওয়ার চূড়ান্ত সময়সীমা। আর মাত্র ২৪ ঘন্টা পরেই সেই সময়সীমা শেষ হতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশগুলি প্রকাশ্যে এনে রাজ্য সরকার ডিএ দেওয়ার ক্ষেত্রে কী মনোভাব প্রকাশ করতে চাইছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। আদালতের নির্দেশিত সময়সীমার মধ্যে বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে যখন সরকারি মহলে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে, ঠিক সেই সময় ষষ্ঠ বেতন কমিশনের এই সুপারিশ নতুন করে ডিএ আগুনে ঘি ঢেলেছে বলে মনে করছে প্রশাসনিক মহল। অন্যদিকে বকেয়া ডিএ দেওয়ার সময় চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে পৌঁছনয় আদালত অবমাননার আবেদন করতে প্রস্তুত ডিএ মামলাকারীরা। এই মামলার অন্যতম পিটিশনার মলয় মুখোপাধ্যায় অবশ্য এক হাত নিয়েছেন ষষ্ঠ বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারকে। মলয়বাবুর প্রতিক্রিয়া, “কমিশনের চেয়ারম্যান নিজে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ছিলেন। নিজে কেন্দ্রীয় হারে বেতন ও ডিএ নিয়েছেন। আর রাজ্যের কর্মচারীদের ক্ষেত্রে উল্টো সুর গাইছেন। আগেও আমরা এই সুপারিশের প্রতিবাদ জানিয়েছি।” বস্তুত, ২০০৯-১৯ পঞ্চম ও
ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী রাজ্য সরকারি কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না এই মর্মে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বেতন কমিশন সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চায় বেতন কমিশনের সুপারিশ নিয়ে গোপনীয়তার প্রয়োজন কী? পয়লা জুলাইয়ের মধ্যে সুপারিশগুলি প্রকাশ্যে আনার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সেই মোতাবেক বুধবার বিকেল থেকে পর্যায়ক্রমে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশগুলি পাবলিক ডোমেইনে আনে নবান্ন যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বকেয়া ডিএ নিয়ে নতুন জটিলতা তৈরি হয়েছে।