কসবার ল কলেজে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তিন তরুণ। তাঁরা প্রত্যেকেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের স্থানীয় নেতা। এই ঘটনায় সাড়া পড়ে গিয়েছে। রথ যাত্রা উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী এখন রয়েছেন দিঘাতে। রাজ্য প্রশাসন চলছে কার্যত ওই সৈকতশহর থেকেই। এই আবহে খাস কলকাতার কলেজে ধর্ষণে টিএমসিপির নাম জড়িয়ে যাওয়া ঘটনাটিকে এক অন্য মাত্রা দিয়েছে। যা রাজ্য প্রশাসনের পাশাপাশি রক্তচাপ বাড়াচ্ছে শাসকদল তৃণমূলেরও।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্তেরা ওই কলেজের ছাত্র বা প্রাক্তনী। সম্প্রতি গভর্নিং বডির সুপারিশে ওই কলেজে অস্থায়ী চাকরি পেয়েছিলেন এক অভিযুক্ত। তাঁর সঙ্গেই তৃণমূলের তাবড় নেতাদের ছবি ভাইরাল হয়েছে। জানা গিয়েছে, কলেজে পড়ার সময় ওই অভিযুক্ত টিএমসিপির ইউনিট প্রেসিডেন্ট ছিলেন। শাসক দলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ দহরম মহরম। এ হেন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠায় ব্যাকফুটে তৃণমূলও। দলের ছাত্র শাখার নেতৃত্ব কী বলবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। দক্ষিণ কলকাতা টিএমসিপি এবং যুবও শাখার সভাপতি সার্থক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্তদের সঙ্গে টিএমসিপি-র যোগাযোগের যে কথা বলা হচ্ছে, তা সত্যি নয়। তাঁরা টিএমসিপি-র কোনও পদাধিকারী নন। টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলছেন, “যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সে কলেজের কর্মী। ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত নয়।” বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর অভিযোগ, ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ২০-৩০টি দুর্নীতির অভিযোগ ছাড়াও ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার, শ্লীলতাহানি করার চেষ্টার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। শাসক দলের নেতা হওয়ায় কেউ ঘাটায় না বলেও দাবি এসএফআই-এর। দক্ষিণপন্থী ছাত্র সংগঠন এবিভিপি এই ঘটনাকে আরজি কর কাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করে কোমর বেঁধে রাস্তায় নামছে। তাদের এক নেতার দাবি, মূল অভিযুক্ত ভোট লুটেও ওস্তাদ ছিলেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু শুরু থেকেই রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে যাচ্ছেন। এই ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, “এটা শুধু একটা অপরাধ না, এটা টিএমসিপির শিক্ষাঙ্গনকে কলুষিত করার জ্বলন্ত প্রমাণ।”
পুলিশ সূত্রে খবর, গত বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১১টার মধ্যে দুষ্কর্মটি ঘটেছে। রাতেই ছাত্রীটি কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর মেডিকেল পরীক্ষা হয় ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে ধরা পড়ে তিন অভিযুক্ত। শুক্রবার তাদের আদালতে তুলে ১ জুলাই পর্যন্ত নিজেদের হেফাজতে পায় পুলিশ।