কসবার আইন কলেজে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় কলকাতা পুলিশ পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করেছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। শনিবার আলিপুর আদালতে নিজের গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন কসবাকান্ডের নির্যাতিতা।
জানা গিয়েছে, সিট-এর নেতৃত্বে রয়েছেন ডিসি সাউথ সাবার্বান ডিভিশনের অধীনস্থ অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার প্রদীপকুমার ঘোষাল। লালবাজার সূত্রে জানা গেছে, এই বিশেষ টিম অভিযোগকারিণীর বয়ান, ঘটনাস্থলের ফরেনসিক প্রমাণ, সিসিটিভি ফুটেজ এবং অভিযুক্তদের জবানবন্দির ভিত্তিতে তদন্ত করবে।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে ছেঁড়া চুল, প্লাস্টিক ও কাঁচের বোতল, এবং এফআইআরে উল্লিখিত হকি স্টিক, যেটা দিয়ে অভিযোগ অনুযায়ী নির্যাতিতাকে আঘাতের চেষ্টা করা হয়েছিল। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হল, একজন অভিযুক্তের মোবাইল থেকে উদ্ধার হওয়া ভিডিও, যা দিয়ে নির্যাতিতাকে ব্ল্যাকমেল করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। ২৫ জুন দুপুর ৩:৩০ থেকে রাত ১০:৫০ পর্যন্ত সাত ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। অভিযোগকারিণীর বয়ানের সঙ্গে এই ফুটেজ মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। ফুটেজে দেখা গেছে, প্রমিত মুখোপাধ্যায় ও জেব আহমেদ নামের দুই অভিযুক্ত ঘটনার সময় ইউনিয়ন রুমের বাইরে পাহারা দিচ্ছিল। মেডিকেল রিপোর্টে নিগৃহীতার শরীরে ধস্তাধস্তির স্পষ্ট চিহ্ন পাওয়া গেছে।
প্রাথমিক তদন্তে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র ও কলেজ নিরাপত্তারক্ষীর ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি স্পষ্ট করতে মেইন গেটের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় কলেজ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আগাম অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এক গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘটনার পর থেকে রাজ্যজুড়ে ছাত্র সমাজ, নাগরিক সমাজ এবং আইনজীবী মহলে ক্ষোভ বাড়ছে। হাইকোর্টে ইতিমধ্যেই এক সুয়োমোটো মামলার আবেদন জমা পড়েছে। এই ঘটনায় দ্রুত, কঠোর এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে সর্বত্র।
Leave a comment
Leave a comment