বাংলায় এখন মেয়েরা ভাগ্যবান! কারণ তারা সরকারের কন্যাশ্রী পায়। ফর্ম ফিলআপ করলেই স্বপ্ন দেওয়া হয়, শিক্ষা, সম্মান, স্বাধীনতা। তারপর কী হয়? মেয়েটি যখন ক্লাস শেষে বাড়ি ফেরে, একদল পুরুষতান্ত্রিক হিংস্রতা তার পিছু নেয়। সেদিন তার বইয়ের ব্যাগ ছিঁড়ে পড়ে যায়, জামাকাপড় ছিঁড়ে যায়, ছিঁড়ে যায় তার আত্মমর্যাদা। আর সরকার? তারা তখন ব্যস্ত, ইউনাইটেড নেশনস থেকে আসা একটা মেইল চেক করতে, যেটাতে লেখা, “Kanyashree is a global model.”
অভিনন্দন বাংলা!
এখানে মেয়েরা ধর্ষণের আগে ‘গর্ব’ হয়, আর ধর্ষণের পরে ‘স্ট্যাটিসটিক্স’।সরকার বলে, “আমরা মেয়েদের ক্ষমতা দিচ্ছি।” কী সুন্দর কথা! মেয়েরা এখন পড়তে পারছে, কলেজে যেতে পারছে, আর হ্যাঁ, ধর্ষণের জন্য সময়মতো হাজিরাও দিতে পারছে!
কারণ এ রাজ্যে এখন নারীর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, ঘরে ফিরতে পারা, নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার মধ্যেই সার্থকতা।
আমরা এমন এক রাজ্যে বাস করি, যেখানে ধর্ষণ এখন ‘পরিকল্পিত দুর্ঘটনা’, প্রশাসন এখন ‘দর্শক গ্যালারি’, আর প্রকল্পগুলো হল ‘মেকআপ কিট’, যা বাস্তবের ক্ষতগুলো ঢাকার অভিনয় করে মাত্র।
হয়তো আগামী দিনে নতুন স্কিম চালু হবে, “নির্যাতিতাশ্রী প্রকল্প”, যেখানে ধর্ষণের পর মেয়েটির পরিবার ৫০,০০০ টাকা পাবে, একগুচ্ছ ফুল, আর একটি শোকবার্তা, “এই ঘটনা সরকারের নজরে এসেছে। তদন্ত চলছে।”
আর এই রাজ্যের কিছু অভিজাত নাগরিক বলবে, “সব দোষ তো সরকারের নয়, মেয়েরাও তো…”
হ্যাঁ, নিশ্চয়ই! হয়তো মেয়েটির দোষ ছিল সে কন্যাশ্রীতে নাম তুলেছিল, কিন্তু ধর্ষণপ্রতিরোধী অ্যান্টিভাইরাস ইনস্টল করেনি!
সত্যিই, এক আশ্চর্য যুগে আছি আমরা। যেখানে মেয়েরা অনুদান পায়, সম্মান পায় না। প্রকল্প পায়, পার্থিব নিরাপত্তা পায় না। পুরস্কার আসে, জীবনটা ঠিকঠাক ফেরে না। এত প্রকল্প, এত পোস্টার, এত পদক, সবই যদি একজন ধর্ষিতার মুখে ন্যায়ের হাসি ফেরাতে না পারে, তাহলে ওই কন্যাশ্রী আসলে কার জন্য?
এই রাজ্য এখন প্রকল্পের সাজঘর! আর মেয়েরা সেই মেকআপের মডেল।
কিন্তু মেকআপ উঠে গেলে, যা থাকে তা হলো, রক্ত, চোখের জল, আর এক গলা দমবন্ধ চিৎকার!
আজ প্রশ্ন একটাই,
কন্যাশ্রী থাকুক, কিন্তু “কন্যা”টা থাকবে তো?