কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় এবার গ্রেফতার করা হল কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকেও। তদন্তে উঠে এসেছে, ঘটনার সময় কলেজে উপস্থিত ছিলেন বছর পঞ্চান্নর ওই নিরাপত্তারক্ষী। নির্যাতিতার বয়ানে উঠে এসেছে তাঁর ভূমিকাও। ঘটনার সময় ওই নিরাপত্তা রক্ষী বন্ধ করে দিয়েছিলেন গেট।
এই নিয়ে কসবা গণধর্ষণকাণ্ডে গ্রেফতার হল চারজন। এর আগে মূল অভিযুক্ত প্রাক্তন ছাত্র ও অস্থায়ী কর্মী-সহ কলেজের দুই ছাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এবার কলেজের সুরক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তির যুক্ত থাকার ইঙ্গিতে চাঞ্চল্য আরও বেড়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিরাপত্তারক্ষীর বয়ানে অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। তদন্তকারীদের ধারণা, তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লুকানোর চেষ্টা করছেন।
নির্যাতিতা ছাত্রী জানিয়েছেন, ২৫ জুন রাতে তাঁকে গার্ডরুমেই নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। সেই সময় অভিযুক্তরা নিরাপত্তারক্ষীকে বাইরে যেতে বলে, দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়। ছাত্রীটি সাহায্যের জন্য বারবার গার্ডের কাছে আর্তি জানান, কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি।
তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় শুধু অভিযুক্তরাই নয়, কলেজ চত্বরে আরও কয়েকজন কর্মী ও ছাত্রছাত্রী উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের ভূমিকা নিয়েও শুরু হয়েছে খতিয়ে দেখা।
এছাড়া নির্যাতিতার অভিযোগ, ধর্ষণের ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ড করা হয়েছিল। সেই ভিডিয়ো অন্য কোথাও পাঠানো হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে অভিযুক্তদের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। মোবাইল ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনায় কলেজের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে অভিভাবক মহল। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘যেখানে নিরাপত্তারক্ষী পর্যন্ত অপরাধে জড়িত, সেখানে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা কে দেবে?’’
রাজ্য নারী কমিশন এবং মানবাধিকার কমিশন ইতিমধ্যেই ঘটনাটির উপর নজর রাখছে। কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সমস্ত অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি নিশ্চিত করতেই চলছে দ্রুত তদন্ত।