মানবজাতি যেভাবে প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার করেছে তারই পরিণতি আজ বিশ্বউষ্ণায়ন। বিশ্বের বহু দেশে তাপমাত্রা হাফ সেঞ্চুরি পার করেছে। আবার কোথাও বৃষ্টি তার রৌদ্ররূপে ভাসিয়ে দিয়েছে গোটা গ্রাম কে গ্রাম। বিশেষজ্ঞদের মতে এখন প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে মানবজাতির ওপর। কারণ বহু সতর্কবার্তা দিয়েও মানুষের হুঁশ ফেরেনি।
নাম্বিয়ায় নেমে আসা বিপর্যয় প্রকৃতির সেই প্রতিশোধই বলা যায়। দক্ষিণ আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত ছোট্ট দেশ নাম্বিয়া। নাম্বিয়ার অবস্থা এতটাই করুন যে জনগণকে বাঁচাতে জঙ্গলের ৭০০-র বেশি পশুকে হত্যা করে ফেলেছে সে দেশের সরকার। এই দেশে হিংস্র পশুদের কাছে মানুষই আতঙ্কের আরেক নাম। বর্তমানে নাম্বিয়া ভুগছে বিকট খাদ্যসঙ্কটে। তাই মানুষের উদরপূর্তিতে এই পশুদের মেরে তাদের মাংস খাদ্য হিসেবে দেওয়া হচ্ছে জনগণকে। এই পশু হত্যা না হলে না খেতে পেয়ে মরতে হবে গোটা দেশকে। এই পশু হত্যার আরেক কারণ হিসেবে সরকার বলছে, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য সীমিত খাদ্য সম্পদের কারণে মানুষ-বন্যপ্রাণী সংঘর্ষের ঝুঁকি কমানোও।
জানা গেছে, গত ১০০ বছরের ইতিহাসে এতো বড় খরার মুখ দেখেনি আফ্রিকা। অবস্থা এমন একেবারে না খেয়ে মরতে বসেছে নাম্বিয়ার জনগণ । তাই তাদের বাঁচাতে জঙ্গলের নিরীহ ৭০০ পশু যার মধ্যে রয়েছে ৩০০ হাতি, ৩০ টি হিপ্পোস, ৫০ ইম্পালা, ৬০ মোষ, ১০০ ব্লু উইল্ডবিস্ট এবং ১০০হরিণ মেরে তাদের মাংস মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছে সে দেশের সরকার।
এছাড়া এখন পর্যন্ত ১৬০টি পশুর ৬১,৮০০ কিলোর বেশি মাংস মজুত করেও রেখেছে সরকার। নাম্বিয়া সরকারের তরফে বলা হচ্ছে, এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে যাতে খরাগ্রস্ত দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকার মানুষদের কিছুটা হলেও খিদে মেটানো যায়।
দক্ষিণ আফ্রিকার নাম্বিয়া বিধ্বংসী খরায় আক্রান্ত। এখানে বৃষ্টি এতটাই কম যে প্রচন্ড গরমে একদিকে যেমন চাষবাস প্রায় শেষ বললেই হয়, অন্যদিকে গরমে মানুষদের অবস্থা ভীষণ খারাপ।
বহুদিন যাবৎ খরাগ্রস্ত এই দেশগুলির জন্য এগিয়ে এসেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘও। খাদ্যবস্তু পাঠালেও তা যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন খোদ রাষ্ট্রসংঘের মানবিক সাহায্য দপ্তর। রাষ্ট্রসঙ্ঘ জানিয়েছে, প্রকৃতির রোষানলে এখানকার অবস্থা এতটাই খারাপ যে দিনের পর দিন গোটা দেশের খিদে মেটানো সম্ভব নয়, অথচ বিকল্প ব্যবস্থাও কিছু পাওয়া যাচ্ছে না।