কসবার আইন কলেজে হওয়া ধর্ষণকাণ্ডে তদন্তের গতিপ্রকৃতি খতিয়ে দেখতে রবিবার সকালে জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল কলেজ চত্বরে হাজির হয়। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন কমিশনের সদস্যা অর্চনা মজুমদার।
প্রথমে কসবা থানায় যায় ওই প্রতিনিধি দল। তার পর রবিবার সকালেই তাঁরা কলেজে পৌঁছন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর প্রতিনিধিদের নির্যাতিতার বাড়িতে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে এর আগে নির্যাতিতার বাবার সঙ্গে একাধিক বার ফোনে কথোপকথন হয়েছে কমিশনের সদস্যাদের। প্রসঙ্গত, শনিবার নির্যাতিতার বাড়িতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল মহিলা কমিশনের। কিন্তু সেই দিনই ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য নির্যাতিতাকে কলেজে নিয়ে যায় পুলিশ। ফলে নির্ধারিত সূচি বদলাতে হয় প্রতিনিধিদের। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় শুক্রবারই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে জাতীয় মহিলা কমিশন। কমিশনের তরফে কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার সঙ্গে যোগাযোগ করে তিন দিনের মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়।
এ দিকে, কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যেই চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তালবাগান ক্রসিং থেকে দু’জন ও রাত সাড়ে ১২টায় তৃতীয় জনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই তিন জনের নাম নির্যাতিতার অভিযোগপত্রে ছিল, যেখানে তিনি উল্লেখ করেন, এক জন তাঁকে ধর্ষণ করেন, বাকি দু’জন সহযোগিতা করেন। শনিবার গ্রেফতার করা হয় কলেজের সিকিউরিটি গার্ডকেও। নির্যাতিতার অভিযোগে বিশেষ ভাবে উঠে আসে কলেজের নিরাপত্তারক্ষীর ‘নিষ্ঠুর নীরবতা’। নির্যাতিতা জানান, তাঁর কাছে সাহায্য চেয়েও সাড়া পাননি। শনিবার সকালে ওই সিকিউরিটি গার্ডকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ঘটনার জেরে রাজ্যজুড়ে ক্ষোভ-প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। তবে এই প্রতিবাদের মধ্যেই এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্তের বাবা এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমি আগে একজন ভারতীয়, পরে কারও বাবা। যদি আমার ছেলে দোষী হয়, তাহলে তার কঠোর শাস্তি হোক। আদালত ও পুলিশ তদন্ত করছে—আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে আইনের উপর।”
ইতিমধ্যেই কসবার ওই আইন কলেজের গণধর্ষণের ঘটনার দ্রুত বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে একজোট হয়েছেন সমাজের নানা স্তরের মানুষ, আইনজীবী, অধিকার কর্মী থেকে সাধারণ নাগরিক।