প্রতীক্ষার অবসান! আগামী ৮ জুলাইয়ের মধ্যেই ঘোষণা হয়ে যেতে পারে ভারত-আমেরিকা অন্তর্বর্তী বাণিজ্য চুক্তির। সূত্রের খবর, দুই দেশের মধ্যে প্রস্তাবিত চুক্তির সব শর্তেই সম্মতি হয়েছে। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের স্পেশাল সেক্রেটারি রাজেশ আগরওয়ালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বর্তমানে আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটনে রয়েছে। দু’পক্ষের আলোচনাও প্রায় শেষ।
একদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশ্বব্যাপী ‘পাল্টা শুল্ক’ বা ‘রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ আরোপের সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী ৯ জুলাই। শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানিয়েছেন, সময়সীমা আর বাড়ানো হবে না। অন্যদিকে, আগামী ৮ জুলাইয়ের মধ্যেই হতে পারে ভারত-আমেরিকা মধ্যবর্তী বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা। উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, ৯ জুলাই পর্যন্ত ভারতের কিছু পণ্যের উপর ২৬ শতাংশ অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে। যদিও ১০ শতাংশের মূল শুল্ক তখনও বহাল ছিল। ভারত চাইছে এই অতিরিক্ত ২৬ শতাংশ শুল্ক পুরোপুরি মুকুব করুক মার্কিন সরকার।
চূড়ান্ত চুক্তি না হলেও, দুই দেশ অক্টোবর মাসের মধ্যে একটি বিস্তৃত, বহু খাত নিয়ে প্রাথমিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্য রয়েছে। এই প্রস্তাবিত চুক্তিতে কৃষি, অটোমোবাইল, শিল্পজাত পণ্য এবং শ্রমনির্ভর খাতগুলিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে ভারতের পক্ষে কৃষি ও দুগ্ধ খাতে আমেরিকাকে শুল্ক ছাড় দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে ভারত দুগ্ধ খাত খুলে দেয়নি।
ভারতের সঙ্গে বড় বাণিজ্য চুক্তি করার বিষয়ে সম্প্রতি বহুবার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বাণিজ্যের প্রতিটি প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। আমেরিকা চাইছে কিছু নির্দিষ্ট শিল্পজাত পণ্য, বৈদ্যুতিক গাড়ি, ওয়াইন, পেট্রোকেমিক্যাল, দুগ্ধজাত দ্রব্য এবং কৃষিপণ্য যেমন আপেল, বাদাম, ও জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড ফসলের উপর শুল্ক ছাড় পেতে। আবার ভারত চাইছে শ্রমনির্ভর খাত যেমন টেক্সটাইল, রত্ন ও গয়না, চামড়ার সামগ্রী, তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক, কেমিক্যাল, চিংড়ি মাছ, তৈলবীজ, আঙুর ও কলার উপর শুল্ক ছাড়। সব মিলিয়ে, এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এক অন্য মাত্রা নেবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।