দক্ষিণ এশিয়ায় চলা রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নয়া চাল চিন এবং পাকিস্তানের। নতুন ‘আন্তর্জাতিক জোট’ তৈরির পথে এই দুই দেশ। এই নতুন সংগঠনটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন ‘সার্কে’র জায়গা নিতে পারে। দীর্ঘসময় ধরে ‘সার্কে’র ভুমিকা নেই বললেই চলে। সেই জায়গায় নয়া ‘আন্তর্জাতিক জোট’ তৈরির চিন্তা চিনের। পুরোপুরিভাবে তা সমর্থন জানিয়েছে পাকিস্তানও। শুধু তাই নয়, এই জোটে বাংলাদেশকেও যুক্ত করা হতে পারে বলে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছে। নয়া এই জোট তৈরি হলে চাপ বাড়তে পারে ভারতের।
পাকিস্তানের এক সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, চিনের কুনমিঙে সম্প্রতি একটি বৈঠক হয়। যেখানে সে দেশের এক প্রতিনিধি ছাড়াও পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই নয়া নতুন ‘আন্তর্জাতিক জোট’ তৈরির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। চিনের এহেন প্রস্তাবে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ সহমত হয়েছে বলে দাবি। শুধু তাই নয়, আঞ্চলিক একীকরণের ক্ষেত্রে নতুন জোটের প্রয়োজন বলে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা একমত বলেও দাবি।
যদিও মহম্মদ ইউনূস সরকারেরর বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, কোনো ধরনের জোটে বাংলাদেশ থাকছে না। বরং ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার উপরেই জোর দিয়েছেন তৌহিদ। তাঁর কথায়, ওই বৈঠক রাজনৈতিক ছিল না। বলে রাখা প্রয়োজন, সময়ের সঙ্গে সার্ক শুধুমাত্র সংগঠন হিসাবেই রয়েছে। দীর্ঘসময় কোনও বৈঠক হয়নি। সার্কে মোট আটটি দেশ রয়েছে। আছে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা এবং মলদ্বীপ। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই গোষ্ঠীতে নেই চিন।
২০১৪ সালে কাঠমান্ডুতে শেষ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় সার্কে। এরপর ২০১৬ সালে ইসলামাবাদে সার্কের সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও তা ভেস্তে যায়। উরি হামলার পর এই সম্মেলনে যোগ দিতে ভারত অংশ নেবে না বলে স্পষ্ট জানানো হয়। এরপর বাংলাদেশ, ভুটান এবং আফগানিস্তানও ইসলামাবাদে সার্কের সম্মেলনে যোগ দেবে না বলে জানায়। একাধিক দেশ না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে ওই সম্মেলন ভেস্তে যায়। এরপর থেকে আর কোনো সম্মেলন সার্কের হয়নি। শুধু তাই নয়, এরপর থেকে এই গোষ্ঠী নিস্ক্রিয় অবস্থাতেই পড়ে।
যদিও পাক সংবাদমাধ্যমের দাবি, নয়া গোষ্ঠীতে ভারতকে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে।। শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ এবং আফগানিস্তানের মতো দেশগুলিও যুক্ত করা হতে পারে। এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, আঞ্চলিক যোগাযোগ এবং বাণিজ্য সহ একাধিক ক্ষেত্রে গতি আনতেই নয়া জোট তৈরির ভাবনা। যদিও এই ভাবনা প্রাথমিকস্তরে রয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। যদিও কুটনৈতিকমহল নয়া মঞ্চ তৈরির ক্ষেত্রে নয়া ‘ষড়যন্ত্রে’র গন্ধ পাচ্ছে। বিশেষ করে চিনের ভুমিকার দিকে বিশেষ নজর রাজনৈতিক কারবারিদের। এমনকী পাকিস্তান থাকলে ভারত নয়া জোটে যোগ দেবে কিনা সেদিকেও বিশেষ নজর রাজনৈতিক মহলের।