সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
আগামী ৫ জুলাই উল্টোরথ। মাসির বাড়ির বাৎসরিক ভ্রমণ সেরে নিজ্গৃহে ফিরবেন জগন্নাথ,বলরাম সুভদ্রা। আর এই উল্টো রথ ঘিরে ফের রাজ্যজুড়ে রথ পরিক্রমায় ভক্তদের ঢল যে নামবে তা বলাই বাহুল্য। সে কারণেই দিঘার সরকারি উদ্যোগের রথযাত্রা উৎসবে উল্টো রথেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসনিক কাজ এবং নিরাপত্তা জনিত কারণে উল্টোরথে দিঘায় থাকছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রথযাত্রা উৎসবের দিনের মতোই যাতে নির্বিঘ্নে উল্টো রথ সম্পন্ন হয় সেদিকে সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে নবান্নের। মুখ্যমন্ত্রীর দীঘায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় উল্টোরথের কর্মসূচি পালনে ছয় মন্ত্রীর উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়, অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সহ ছয়জন মন্ত্রী আগামী ৪ তারিখেই দিঘাতে পৌঁছে যাবেন। দিঘায় উল্টোরথে মাসির বাড়ি থেকে জগন্নাথ মন্দিরে ফেরার প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ, অনুষ্ঠানের আচার রীতি ও মন্দিরের ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত যাবতীয় দায়িত্ব সামলাবেন এই ছয় মন্ত্রী।
গত ২৭ জুন রথযাত্রা উৎসবের দিনে রথের মূল রশি সাধারণ মানুষ তথা ভক্তবৃন্দদের ছুঁতে না দেওয়া নিয়ে বিতর্ক হয়। রাস্তার দু’ধারে ব্যারিকেড বন্দি হয়ে রথযাত্রা পরিক্রমা উপভোগ করতে হয় সাধারণ মানুষকে। যদিও নিরাপত্তার খাতিরে এবং প্রাণহানি বা কোন দুর্ঘটনা এড়াতে এই সরকারি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়। পাল্টা রথযাত্রার দিনে শ্রীক্ষেত্র পুরীতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা রাজ্য সরকারের যুক্তির ক্ষেত্রে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। উৎসব পালন করতে গিয়ে প্রাণহানির মতো মর্মান্তিক ঘটনা যাতে না ঘটে সে কারণেই উল্টোরথেও রথযাত্রা উৎসবের দিনের মতোই কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। তবে মন্দির থেকে মাসির বাড়ি যাওয়ার পথে একাধিক বার রথের চাকার লোহার বেড় খুলে যে বিপত্তি তৈরি হয়েছিল সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে উল্টো রথে না হয়। সে ব্যাপারেও মন্ত্রীদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্টো রথের উৎসব নির্বিঘ্নে এবং সুস্থভাবে পালন করা রাজ্য সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য। একথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ছয় মন্ত্রীকে নিজেও নিজেও দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশকে পাঠিয়ে উপরেই আগামী ৪ জুলাই দীঘায় পৌঁছবেন রাজ্যের ৬ মন্ত্রী।
রথযাত্রার উৎসবের দিনের মতোই সাধারণ মানুষের কাছে রথের সঙ্গে যুক্ত রশ্মি পৌঁছে দেওয়া হবে। সেই কাজ যাতে সুচারু ভাবে সম্পন্ন হয় এবং রাস্তার দু’ধারে অপেক্ষমান সাধারন মানুষ যাতে সেই রশির স্পর্শ পাক সে ব্যাপারে যথাযথ দায়িত্ব নিতে হবে বলে মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।