কসবা-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিজেপির যুব মোর্চার মিছিল ও সভার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের একক বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সভা ও মিছিলের আয়োজন করা যাবে। তবে তা হতে হবে নির্দিষ্ট নিয়ম ও শর্তাবলীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, মিছিল শুরু হবে কালীঘাট থানা থেকে এবং শেষ করতে হবে সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজের উল্টোদিকে। যদিও আবেদনকারীরা চেয়েছিলেন মিছিল কসবা থানার সামনে শেষ করতে। আদালত তা মানেনি। কারণ, সংশ্লিষ্ট ঘটনাটি নিয়ে এখনও মামলা বিচারাধীন এবং অভিযুক্ত পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
আদালতের শর্তাবলী:
বিকেল ১টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মিছিল ও সভার অনুমতি।
সভায় সর্বোচ্চ ৩ হাজার ব্যক্তি উপস্থিত থাকতে পারবেন।
মঞ্চের প্রস্থ এমন হতে হবে যাতে গাড়ি চলাচল ব্যাহত না হয়।
প্ল্যাকার্ডের প্রস্থ রাস্তার এক-তৃতীয়াংশের বেশি না হয়।
রাস্তার বাকি দুই-তৃতীয়াংশ জনসাধারণের চলাচলের জন্য খোলা রাখতে হবে।
মিছিলে কোনও প্রকার ব্যারিকেড (কসবা থানার সামনের ব্যারিকেড এবং সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের সামনের ব্যারিকেড) ভাঙার চেষ্টা করা যাবে না।
সরকারি কর্মীদের উপর আক্রমণ চললে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মিছিলের আয়োজকদের ফোন নম্বর সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দিতে হবে।
ট্র্যাফিক পুলিশের পর্যবেক্ষণে থাকবে গোটা কর্মসূচি।
এজলাসে এই মামলার শুনানিতে বিজেপির যুব মোর্চা তরফের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য আদালতকে বলেন, “এটি একটি প্রতীকী প্রতিবাদ। কসবা থানার সামনে নয়, আমরা তার বিপরীতে একটা পার্ক সংলগ্ন খোলা জায়গায় সভা করতে চাই।” জবাবে রাজ্যের পক্ষে সরকারি কৌঁসুলি শীর্ষণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এর আগে ব্যারিকেড ভেঙেছে। শুভেন্দু অধিকারী বা বিজেপি নেতাদের উপস্থিতিতে বার বার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হয়েছে। কসবা থানার কাছে মিছিল শেষ করলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।” বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের পর্যবেক্ষণ,”আপনারা একটি রেজিস্টার্ড রাজনৈতিক দল। আইন মেনেই আপনাদের অনুমতি দিতে হবে, তবে একই সঙ্গে জনস্বার্থ এবং নিরাপত্তাও বিচার করতে হবে।” রাজ্যের তরফে বিজন সেতুর আগে বা ট্রায়াঙ্গুলার পার্কে মিছিল শেষ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। যদিও বিজেপি জানায়, সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজ থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে তারা সভা করতে প্রস্তুত। যেটি কসবা থানার প্রায় ৬৫০ মিটার দূরে এবং তুলনামূলক ভাবে কম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি বলেন, “মিছিল বিজন সেতুর পরে গিয়ে শেষ করুন। আইন মেনে মিছিল করলে আপত্তির কিছু নেই। তবে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব।”
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, বুধবার দুপর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল ও সভা করতে পারবে বিজেপির যুব মোর্চা। তবে পুলিশ ও প্রশাসনকে কড়া নজরদারি রাখতে হবে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।