শুধু বিজ্ঞানীদের কাছে নয়, গোটা মানবজাতির কাছে আতঙ্কের হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্ব উষ্ণায়ণ। এই জলবায়ু পরিবর্তন হিমাচল প্রদেশকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তবে এর জন্য হিমালয়ের ভৌগলিক অস্থিরতা এবং মানব জাতির নানান অপকর্ম সমান দায়ী।
সম্প্রতি বৈজ্ঞানিকরা জানিয়েছেন মাত্র এক দশকে হিমাচলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে ১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুধুমাত্র হিমাচল প্রদেশের ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধি জলবায়ুর ধরনে পরিবর্তন এনেছে। বৃষ্টির পরিমাণ এবং তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছ বহুগুন। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির পরিমাণ বেড়েছে। ভারতের আবহাওয়া দফতর (IMD) জানিয়েছে, যদি ২০-৩০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে এক ঘন্টায় ১০০ মিমির বেশি বৃষ্টি হয় তখন তাকে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি বলে। আর সেখানেই হিমাচলের ক্ষেত্রে ২০২৪-এর বর্ষাকালে ১৮ বার মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ঘটনা দেখা গেছে। বিশ্বউষ্ণায়ণের কারণে বায়ুমন্ডলে আর্দ্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঘটছে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির পরিমাণ।
২০২৩এ কুলু, মন্ডি, শিমলা জেলায় স্বাভাবিকের থেকে ১৮০% বেশি বৃষ্টিপাতের ঘটনা ঘটেছে। এই বৃষ্টির কারণে পাহাড় এবং সমতলে ফাটল ধরে গিয়েছে। হিমাচল প্রদেশ হিমালয়ের পশ্চিমে অবস্থিত পৃথিবীর সবথেকে উচ্চ পর্বতশৃঙ্খলা। এটি সাধারণত সব থেকে অস্থির এবং ভূকম্পপ্রবণ এলাকার মধ্যে পরে।
এভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় হিমাচলে ভূমিক্ষয়ের আশংকা ৫৮.৩৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। এইসব অঞ্চলে বৃষ্টি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাহাড়ের উচ্চতা এবং ঢালু অংশ থেকে জল সহজে নীচের দিকে নামতে শুরু করে। যা দ্রুত বন্যায় পরিণত হয়।
অন্যদিকে সব থেকে মারাত্মক বিষয় হল, হিমাচলের হিমবাদগুলি যেভাবে গলছে তাতে নদীগুলিতে জলস্তর বিপদসীমার উপরে থাকছে। বন্যা যে কারণে অবধারিত হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি হিমবাহের কাছে গরম-ঠান্ডা হাওয়ার মিশ্রণ ঘটায় মেঘ ভাঙার আশংকা বাড়ছে।