বাংলাদেশে এসে গেছে সেই বহু কাঙ্ক্ষিত জুলাই মাস। জানা যাচ্ছে এই মাসের শুরুতেই হতে পারে জুলাই ঘোষণা। বহু চর্চিত ফ্যাসিবাদের ফের ফিরে আসা রুখতে সংবিধান স্থগিতের ঘোষণা হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। অর্থাৎ শুধু মুজিব বা হাসিনার সময়কাল নয়, বাংলাদেশের প্রাণভোমরা সেই মূল সংবিধানটাই বদলে দিতে চাইছেন নতুন বাংলাদেশের কারিগরেরা।
গত বছর এই জুলাই মাসের ৫ তারিখেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে বিদায় নিয়েছিল শেখ হাসিনার সরকার।সেই সরকারের পতনের পর তিনদিনের মাথায় ৮ অগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন মহম্মদ ইউনুস। জুলাই মাসের কথা মাথায় রেখেই আগেভাগে ৮ অগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ’ দিবস হিসেবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিল সরকার। কিন্তু এনসিপি, জামায়াত সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রবল প্রতিবাদে তা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে ইউনূস প্রশাসন।
এক সময় ইউনূসের পাশে থাকা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে ৫ অগস্টের সাধারণ ছাত্র–জনতার সেই অর্জনকে সরকারের কুক্ষিগত করার চেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না। তাদের মতে ৮ অগস্ট ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ শুরু হয়নি। শেখ হাসিনের গদি ছাড়ার দিন ৫ অগস্টকেই ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থান দিবস’ এবং ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিবস’ হিসেবে মান্যতা দিতে চান তারা।একই সঙ্গে ‘জুলাই ঘোষণা’র উপর জোর দিয়েছেন তারা। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুসারে এই ঘোষণায় সংবিধান স্থগিতের পাশাপাশি পরিবর্তনের ওপর দেওয়া হচ্ছে বিশেষ গুরুত্ব।সরকার ও কূটনৈতিক সূত্র জানাচ্ছে একই সঙ্গে সরকারের উচ্চপর্যায়ে পরিবর্তন ঘটতে পারে।এই প্রতিবেদনে একটি সূত্র উল্লেখ করা বলা হয়েছে সংবিধান স্থগিত করা হলে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের অনুরোধ জানানো হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নতুন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হতে পারেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম নয়া দিগন্ত তাদের এক প্রতিবেদনে লিখেছে, “একটি সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক পরিবর্তনে বিদ্যমান সংবিধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিবেচনায় ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে হাসিনার বিদায়ের পরই সংবিধান স্থগিত করা প্রয়োজন ছিল। সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ইমরান আব্দুল্লাহ সিদ্দিক মনে করেন তখনই সংবিধান স্থগিত করে বিপ্লবী বা ঐকমত্যের সরকার গঠন করার ছিল মোক্ষম সময়। তবে জনগণের সর্বোচ্চ অভিপ্রায়ের ক্ষমতা সবসময় থাকে। আপাত দৃষ্টিতে সংবিধান স্থগিত করে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠন করা কঠিন মনে হলেও বৃহত্তর জনগণের ঐকমত্যের ভিত্তিতে তা হতেই পারে।“
এই প্রতিবেদনেই লেখা হয়েছে ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের পর সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার স্বার্থে প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে রেখে দেওয়া হলেও এবার তাঁকে বিদায় নিতে হতে পারে।জাতীয় সরকার দায়িত্ব নিলে নতুন সংবিধান তৈরির বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এবং এক্ষেত্রে নির্বাচন কিছুটা দেরি হলেও প্রয়োজন হলে তা বিবেচনা করা হবে।
Leave a comment
Leave a comment