যশবন্ত বর্মার অপসারণ নিয়ে এবার জোর তৎপর কেন্দ্র! এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মাকে অপসারণের জন্য সংসদে প্রস্তাব আনার তোড়জোড় চলছে কেন্দ্রীয় তরফে। জানা গেছে, নীতিগতভাবে এই প্রস্তাবকে সমর্থন করতে রাজি হয়েছে অধিকাংশ বড় রাজনৈতিক দল। কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বুধবার জানান, খুব শিগগিরই সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে সই সংগ্রহ শুরু হবে। তবে প্রস্তাবটি লোকসভায় আনা হবে নাকি রাজ্যসভায়, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি। লোকসভায় এমন প্রস্তাব তুলতে কমপক্ষে ১০০ জন সাংসদের সই দরকার, আর রাজ্যসভায় প্রয়োজন ৫০ জন সাংসদের সই।
আগামী ২১ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন, চলবে ২১ আগস্ট পর্যন্ত। আগে অধিবেশন শেষ হওয়ার কথা ছিল ১২ আগস্ট, তবে প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু অনুমোদন দিয়ে তা ১০ দিন বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই অধিবেশনের মধ্যেই প্রস্তাব উত্থাপন করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবুও পুরো অপসারণ প্রক্রিয়া এই সময়ের মধ্যেই শেষ হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ বিচারপতি অপসারণের ক্ষেত্রে জাজেস এনকয়ারি অ্যাক্ট, ১৯৬৮ অনুযায়ী, প্রথমে সংসদের যে কোনও একটি কক্ষে প্রস্তাব গৃহীত হলে, স্পিকার বা চেয়ারম্যানকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে হয়। এই কমিটিতে থাকেন একজন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বা প্রধান বিচারপতি, একজন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং একজন বিশিষ্ট আইনজ্ঞ। সাধারণত এই কমিটি ৩ মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেয়। অবশ্য, সময়সীমা বাড়ানোও যায়।
এ বিষয়ে একটি প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। যদিও ওই কমিটির রিপোর্টে যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। তবে রিপোর্টে তাঁর অপসারণের প্রক্রিয়া শুরুর পরামর্শ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে দিল্লিতে বিচারপতি বর্মার সরকারি বাসভবনে ঘটে যাওয়া এক অগ্নিকাণ্ড থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তাঁর বাড়ির এক আউটহাউসে পুড়ে যাওয়া টাকার বস্তা পাওয়া যায়। যদিও টাকার ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানান বিচারপতি বর্মা। বিভিন্ন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করে এবং রিপোর্টে তাঁর অপসারণের সুপারিশ করে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত এক ‘ইন-হাউস’ তদন্ত কমিটি। এরপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে সাংবিধানিকভাবে অপসারণ প্রক্রিয়া শুরু করার অনুরোধ জানান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না।