এই পৃথিবীতে কত কিছুই না ঘটে থাকে! সবকিছু কি জানা সম্ভব? আর সেই অসম্ভবকে সম্ভব করতে দিন রাত কাজ করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষ করে ভূমিকম্প এবং ভূমিধসের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঠিক পূর্বাভাস পেতে যৌথ মহাকাশ অভিযান করতে চলেছে ভারত এবং আমেরিকা। আর এই অভিযানের নাম দেওয়া দেওয়া হয়েছে ‘নিসার’ (NISAR)। শুধু প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়, পৃথিবী পৃষ্ঠের উপর পর্যবেক্ষণ, পরিবেশগত যে কোনও পরিবর্তন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ‘নিসার’-অভিযানের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।
আর এই অভিযান যাতে সফল হয় সেজন্য NASA এবং ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-এর এই যৌথ ভাবে কাজ করছে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের জুলাইয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে GSLV রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হবে ‘নিসার’ বিশেষ স্যাটেলাইট। ওই সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এই অভিযানের মোট খরচ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে ব্যয়বহুল ‘আর্থ ইমেজিং স্যাটেলাইট’।
কীভাবে কাজ করছে ‘নিসার’?
‘নিসার’ স্যাটেলাইটে ডুয়াল ফ্রিকোয়েন্সি রাডার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে দুটি ভিন্ন রাডার রয়েছে-
প্রথম S- ব্যান্ড রাডার। যেটি ইসরো আহমেদাবাদের স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার(SAC) তৈরি করেছে।
দ্বিতীয় L- ব্যান্ড রাডার। যেটি NASA ক্যালেফোনিয়ার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি(JPL) তৈরি করেছে।
প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই দুই রাডার একসঙ্গে পৃথিবীর পৃষ্ঠের উপর কড়া নজরদারি চালাবে। যাতে যে কোনো সূক্ষ্ম পরিবর্তনও ধরা পড়ে যায়। হিমবাহ, আগ্নেয়গিরি, ভূমিধস এবং ভূমিকম্পের মতো ঘটনাগুলির উপরেও কড়া পর্যবেক্ষণ করবে। ফলে যে কোনও বিপর্যয়ের আগাম পূর্বাভাস চলে আসবে হাতের মুঠোয়।
ISRO-NASA যৌথ অভিযান
ইতিমধ্যে মহাকাশে বিপ্লব ঘটিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। বলে রাখা প্রয়োজন, ২০১২ সালে ISRO এবং NASA এর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এই অভিযানের বিষয়ে কথা হয়। এরপর ২০১৪ সালে এই সংক্রান্ত একটি চুক্তি হয়। আর সেই চুক্তি অনুযায়ী ISRO-NASA মহাকাশে যৌথ অভিযান করে এই বিপ্লব ঘটাতে চলেছে