জনরোষের মুখে পড়ে স্থগিত দিল্লিতে পুরনো গাড়ি ও বাইকে পেট্রোল ডিজেল না দেওয়ার বিতর্কিত সিদ্ধান্ত। ১৫ বছরের বেশি পুরনো পেট্রোল ও ১০ বছরের বেশি পুরনো ডিজেল গাড়িকে ‘এন্ড অফ লাইফ’ গাড়ি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ১ জুলাই থেকে সেই সব গাড়িতে তেল না দেওয়ার নির্দেশ কার্যকর দিল্লি সরকার। এই ঘোষণা সামনে আসতেই সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ তৈরি হয়।
দিল্লির রেখা গুপ্ত সরকারের পরিবেশ মন্ত্রী মনজিন্দর সিংহ সিরসা জানিয়েছেন, এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা খুবই কঠিন। নেপথ্যে প্রযুক্তিগত সমস্যা, ক্যামেরার ত্রুটি, সেন্সরের অসুবিধা এবং সিস্টেমের জটিলতাকেই তুলে ধরেছেন তিনি। মন্ত্রী আরও বলেন, যেসব গাড়ি খারাপ অবস্থায় আছে, সেগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু যেসব গাড়ি ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে এবং সরকারি ‘পলিউশন আন্ডার কন্ট্রোল’ সার্টিফিকেট আছে, সে গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, ‘কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টের’ নির্দেশ অনুযায়ী, রাজধানীতে বসানো হয়েছে অটোমেটিক নাম্বার প্লেট রিকগনিশন ক্যামেরা। এই ক্যামেরার মাধ্যমে গাড়ির নম্বর দেখে তার বয়স যাচাই করে জানিয়ে দিচ্ছিল গাড়িগুলি “এন্ড অফ লাইফ ভেহিকেল” কি না। কিন্তু সেই প্রযুক্তি এখনও পুরোপুরি নির্ভরযোগ্য নয় বলে স্বীকার করেছে সরকার।
সরকারের এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন দিল্লির প্রায় ৬২ লক্ষ গাড়ির মালিক। দুই চাকার গাড়ি, প্রাইভেট কার, ট্রাক ও ভিন্টেজ গাড়িও আছে এমন অনেকেই এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। অভিযোগ তোলেন, তাঁদের দামী, ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা গাড়িকে “স্ক্র্যাপ” বা বাতিল ঘোষণা করে নতুন গাড়ি কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। কেউ কেউ বলেন, তাঁদের গাড়ির দূষণ আধুনিক গাড়ির থেকেও কম।
জনৈক দিল্লিবাসী তাঁর ১৬ বছর পুরনো মার্সিডিজ গাড়ি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আবার আরেক জন জানান, তিনি তাঁর ৮ বছর পুরনো রেঞ্জরোভার এসইউভি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন সরকারের এই নীতির জন্য। তাঁদের বক্তব্য, এই নীতি আদতে এক রকম শাস্তি। কারণ নতুন গাড়ি কিনতে গেলে ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত জিএসটি ও সেস দিতে হয়। তবে সরকারের নতুন বার্তায় আপাতত স্বস্তিতে সেই সব গাড়ির মালিকরা।