বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের মৃত্যুর নেপথ্যে কোনও ষড়যন্ত্র বা অপরাধমূলক তৎপরতার প্রমাণ মেলেনি বলে জানাল মহারাষ্ট্র পুলিশ। বম্বে হাই কোর্টে দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে পুলিশ এই কথা জানিয়েছে।
মামলায় দাবি করা হয়েছিল যে, দিশার মৃত্যু রহস্যজনক এবং সুশান্তের মৃত্যুর সঙ্গেও তার সম্পর্ক রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে আদালতের তরফে পুলিশকে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়। সেই রিপোর্টেই পুলিশ স্পষ্ট করে জানায়, দিশা সালিয়ান নিজেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যক্তিদের জবানবন্দি ও ফরেনসিক রিপোর্টের ভিত্তিতে এটাই প্রমাণিত। যদিও মেয়ের মৃত্যুর নেপথ্যে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ তোলেন তাঁর বাবা।
২০২০ সালের ৮ জুন মুম্বইয়ের মালাডে প্রাক্তন সেলিব্রিটি ম্যানেজারের মৃত্যু হয়। সেই সময় পুলিশের তরফে অ্যাক্সিডেন্টাল ডেথ রিপোর্ট করা হয়। এই বছর মার্চ মাসে সতীশ সালিয়ান হাইকোর্টে পিটিশন দায়ের করে মেয়ের মৃত্যুর জন্য সিবিআই তদন্তের দাবি করেন। একই সঙ্গে শিবসেনা বিধায়ক আদিত্য ঠাকরের বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের করেন। তাঁর আবেদনে সতীশ অভিযোগ করেন যে তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল এবং কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তির প্রভাবে তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়। ২ জুলাই আর শুনানি হয়। পরবর্তী শুনানির তারিখ ১৬ জুলাই। যদিও মালবানি পুলিশ এফিডেভিটে জানিয়েছে যে দিশা আত্মহত্যাই করেছেন।
পুলিশের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে পারিবারিক সমস্যার কারণে এবং ব্যবসায় সমস্যা হওয়ায় দিশা সালিয়ান প্রবল মানসিক চাপে ভুগছিলেন। রিপোর্টে এও উল্লেখ করা হয় যে ঘটনার সময় তিনি মদ্যপ ছিলেন। সেই সময় ঘটনাস্থলে দিশার হবু স্বামীও উপস্থিত ছিলেন এবং তিনিও কোনও রহস্যের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন, দাবি রিপোর্টে।
২০২০ সালে ১৪ জুন, আচমকাই খবর পাওয়া যায় অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত প্রয়াত। মুহূর্তে ঝড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয় আত্মঘাতী অভিনেতা কারণ ঘরের মধ্যেই উদ্ধার হয় তার নিথর দেহ। এরপর শুরু হয় তদন্ত এবং একে একে উঠে আসে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য, সবটাই বলিউডের বিরুদ্ধে। কখনও ইন্ডাস্ট্রিতে চলতে থাকা স্বজনপোষণের নিয়ম আবার কখনও ওঠে দেদার মাদক কারবারের অভিযোগ। অনেকেই দাবি করেন সুশান্তের মৃত্যু নিছকই আত্মহত্যা নয়। যদিও কিছুদিন আগেই সেই তদন্তের মীমাংসা হয়েছে এবং জানিয়ে দেওয়া হয় আত্মহত্যাই করেছিলেন অভিনেতা। সেই উত্তাল সময়ে অভিনেতার মৃত্যুর ঠিক এক সপ্তাহ আগে তাঁর ম্যানেজারের মৃত্যু স্বাভাবিকভাবেই মানুষের আলোচনায় উঠে আসে।