বিবিধের মাঝে মিলন… ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের কথা ভাবলেই যে যে বৈচিত্রের কথা মাথায় আসে তার অন্যতম খাবার। প্রত্যেক রাজ্যের, প্রত্যের সংস্কৃতির বিভিন্ন রকমের খাদ্যাভ্যাস, বিভিন্ন রকমের রন্ধন প্রণালী, বিভিন্ন রকমের উপকরণও। ভারতে ‘লাঞ্চবক্স’ অর্থাৎ ‘টিফিন’ নিয়ে যাওয়ার প্রথা বহু পরিচিত। বাড়ির রান্নার স্বাদ বাক্স বন্দি করে সঙ্গে চলে কারও অফিসে, কারও স্কুলে, কারও কারখানায়। এই প্রতিবেদনে রইল ভারতের ১১ রাজ্যের ‘লাঞ্চবক্স’ আইডিয়া। পছন্দ হলে নিজের হাতে ট্রাই করেও দেখতে পারেন।
পশ্চিমবঙ্গের লুচি-ঘুগনি
মশলা দিয়ে কাবলি ছোলা বা মটরের ঘুগনি আর সঙ্গে ফুলকো লুচি। বাক্স ভরে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত সহজ। গড়িয়ে পড়ার সমস্যা নেই এবং খেতেও সুবিধা। এবং লুচি-ঘুগনি কম্বো গরম না করেও খেয়ে নেওয়া যায় অনায়াসে।
উড়িষ্যার চানা ডাল পিঠা
সেদ্ধ চালের পিঠের মধ্যে ডালের পুর দিয়ে খাওয়া। কোনও ঝঞ্ঝাটই নেই। গড়িয়ে পড়া, হাত নোংরা হওয়ার ঝামেলা নেই, নিয়ে যাতায়াত করতেও সুবিধা। খেতে তো সুস্বাদু বটেই।
মধ্যপ্রদেশের বেগুন ভর্তা দিয়ে রুটি
ভর্তা খাওয়ার চল যদিও বাঙালিদের মধ্যেও আছে। তবে এই টিফিন মধ্যপ্রদেশে প্রায়ই দেখা যায়। বেগুন ও সঙ্গে কিছু মশলা পুড়িয়ে একসঙ্গে মেখে নিয়ে আলু-টমেটো পোড়া দিয়ে মেখে খেতে লাগে দারুণ। সঙ্গে দিতে বাদাম ভাজা।
পঞ্জাব বা হরিয়ানার আচার দিয়ে আলুপরোটা
উত্তর ভারতের অতি পরিচিত খাবার। পরোটার আলুর পুর ভরে ভেজে নিলেই হলো। ঘিয়ে ভাজলে তো কোনও কথাই নেই। আর সেই সঙ্গে বাড়িতে বানানো একটু আচার। চলতে পারে টক দইও। দারুণ কম্বিনেশন।
দিল্লি বা উত্তরপ্রদেশের রাজমা-চাউল
চাউল অর্থাৎ বাংলায় ভাত। সেই সঙ্গে বাড়িতে বানানো রাজমার তরকারি। মন জুড়িয়ে যাওয়া লাঞ্চ। যেমন ধরুন আমার আপনার মাছ-ভাত।
উত্তরাখণ্ডের পনির ভুর্জি রোল
পনির ভুর্জি অর্থাৎ ঝুরো করে পনির ভেজে, তার সঙ্গে পিঁয়াজ আর মশলা দিয়ে রুটি বা পরোটার মধ্যে ঢেলে রোল বানিয়ে নিলেই ব্যাস! না নিয়ে যাওয়ার সমস্যা না খাওয়ার। প্রোটিনে ভরপুর এই খাবার স্বাস্থ্যকরও।
গুজরাটের থেপলা ও চুন্দা
থেপলা গুজরাটের জনপ্রিয় খাবার। অনেকটা পরোটার মতো। চুন্দা হচ্ছে বাড়িতে তৈরি এক ধরনের আমের আচার। থেপলা আর চুন্দার যুগলবন্দি অনবদ্য। থেপলা বানানোর সময় দই ও বেসন দিয়ে মণ্ড তৈরি করলে তা নরম হয়।
মহারাষ্ট্রের বরণ ভাত
অরহর ডাল ও চাল দিয়ে তৈরি এই রেসিপি খানিকটা খিচুড়ির মতো বলা যেতে পারে। বরণ ভাতের ওপর হালকা করে ঘি ছড়িয়ে দিলেই নিমেষে ফাঁকা হবে ‘লাঞ্চ বক্স’। পুষ্টিকর তো বটেই এই খাবার সহজপাচ্যও বটে।
গোয়ার জ়াকুটি ও ভাত
গোয়াতেও ভাতের চল আছে ভালোই। স্থানীয় সবজি দিয়ে তৈরি এই বিশেষ ঝোলের (জ়াকুটি) মূল উপাদান নারকেল। ঝালঝাল এই রেসিপি ভাত দিয়ে খেতে দারুণ।
তামিলনাড়ুর লেমন রাইস
টকটক, সরষে-কারিপাতা ফোড়ন দেওয়া এই লেমন রাইস একটা ‘ওয়ান পট মিল’ বলা যেতে পারে। গরম করার ঝক্কি নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা টাটকা থাকে। খেতে দারুণ।
অন্ধ্রপ্রদেশের পুলিহোরা
বাংলায় একে তেঁতুল ভাত বলতে পারেন! তেঁতুলের কাদের সঙ্গে মশলা দিয়ে তৈরি হয় একটি মিশ্রণ, যা বহুদিন রেখে দেওয়া যায়। এটি ভাতে ঢেলে, তার ওপর বাদাম লঙ্কা কারিপাতা ভাজা দিয়ে অনায়াসেই খেয়ে নিতে পারেন।