কসবা গণধর্ষণ-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রের বিরুদ্ধে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে। জানা যাচ্ছে, ধৃত এই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে আগেই ২০১৮ কলকাতা পুলিশকে চিঠি দিয়েছিলেন আইন কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়। সেই চিঠিতে মনোজিতের আচরণ নিয়ে একাধিক উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে পুলিশকে লেখা চিঠিতে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কর্মসূচি চলাকালীন মনোজিৎ মিশ্রের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ।
সেই চিঠি ইতিমধ্যে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘আজতক’-এর হাতে এসেছে। আর তা আসতেই নতুন করে মনোজিতের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অন্যদিকে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে পড়াশোনা শুরু হতে চলেছে সবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে। আগামী সোমবার অর্থাৎ ৭ জুলাই থেকে ক্লাস শুরু হবে বলে জানা যাচ্ছে। তবে ঘটনাস্থল অর্থাৎ গার্ডরুম এবং ইউনিয়ন রুম বন্ধ থাকবে। তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। আর সেই কারনে এই দুটি রুম বন্ধ থাকবে।
তবে কলেজে ক্লাস শুরু করতে কোনও সমস্যা নেই। এই সংক্রান্ত সবুজ সঙ্কেত লালবাজারের তরফে পাওয়া গিয়েছে বলেই খবর। আর এরপরেই উচ্চ শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কলেজে ভাইস প্রিন্সিপাল একটি বৈঠক করেন বলে জানা যাচ্ছে। হয় পরিচালন সমিতির বৈঠকও। আর এরপরেই আগামী সোমবার থেকে ক্লাস সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে শুরু হবে বলে জানা যাচ্ছে। এক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সকাল ৭টা থেকে ক্লাস শুরু হবে। বিজ্ঞপ্তি কলেজের তরফে খুব শীঘ্রই দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থাও থাকবে বলে সিদ্ধান্ত।
মনোজিতের বিরুদ্ধে চিঠি
সর্বভারতীয় ওই সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মনোজিতের বিরুদ্ধে চিঠি দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় কলকাতা পুলিশের তৎকালীন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (হেডকোয়ার্টার)-কে দিয়েছিলেন। যেখানে কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কীভাবে মনোজিৎ ‘দাদাগিরি’ দেখাতেন সেই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ সালে কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে মনোজিৎ এবং তাঁর দলবল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে বলেও পুলিশের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেন দেবাশিসবাবু। এই বিষয়ে পুলিশের কাছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার আবেদনও জানানো হয়েছিল।
কিন্তু এরপরেও কীভাবে মনোজিতের প্রভাব ওই কলেজে ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এমনকী মাথার উপর প্রভাবশালীর হাত থাকাতেই বারবার বেঁচে গিয়েছিলেন এই তৃণমূল নেতা? বলে রাখা প্রয়োজন, গণধর্ষণ মামলায় এই চিঠি তদন্তের স্বার্থে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।