অত্যন্ত বিরল এক বাদুড়ের কামড়ে অস্ট্রেলিয়ায় এক ব্যক্তির মৃত্যুতে ফের ফিরে এলো ৩৫ বছর আগের আতংক ‘লিসাভাইরাস’। নিউ সাউথ ওয়েলসের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে একটি ফক্স ব্যাট কামড়ে দিয়েছিল বলে খবর। কামড়ের সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই জলাতঙ্ক রোগে ভুগতে শুরু করেন ওই ব্যক্তি। রক্ত পরীক্ষায় ধরা পড়ে লিসাভাইরাসের অস্তিত্ব। ১৯৯০ সালের দিকে প্রথম এই ভাইরাসের নাম জানতে পারে বিশ্ব।
অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য দফতর লিসাভাইরাসের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করেছে। বাদুড়ের লালায় থাকে এই ভাইরাস। বাদুড়ের আঁচড়, কামড় বা মল-মূত্র, মৃত বাদুড়ের দেহাবশেষ থেকে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। আক্রান্তের থেকে ভাইরাস আরও অনেকের শরীরে ঢুকেছে বলে আশঙ্কাও করা হচ্ছে। নিউ সাউথ ওয়েলথ হেলথের স্বাস্থ্য সুরক্ষা পরিচালক কেইরা গ্লাসগো জানিয়েছেনা, এর আগে ২০২৪ সালে বাদুড়ের কামড় বা আঁচড়ের কারণে ১১৮ জনের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সন্দেহ করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে যে ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে তাতে স্পষ্ট যে এটি লিসাভাইরাসই। তিনি আরও জানিয়েছেন, করোনার বা রেবিসের থেকেও এটি মারাত্মক। এটি একটি নিউরোট্রপিক ভাইরাস, যা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে। স্নায়ুর কার্যকারিতা নষ্ট করতে শুরু করে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, লিসাভাইরাস শরীরে ঢুকলে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে উপসর্গ হিসেবে থমে জ্বর, পেশিতে ব্যথা, ক্লান্তি, আঁচড় বা কামড়ের জায়গায় ক্ষতস্থান ফুলে রক্ত বা পুঁজ বেরোতে দেখা যাবে। ধীরে ধীরে রোগীর শরীর পক্ষাঘাতে পঙ্গু হতে থাকবে। জল দেখলে আতঙ্ক হবে।
কীটপতঙ্গের বিষ কতটা মারাত্মক তা বোঝা গিয়েছিল অভিনেত্রী করিশমা কাপুরের প্রাক্তন স্বামী সঞ্জয় কাপুরের মৃত্যুর ঘটনাতেও। গত ১৮ জুন এক এক মর্মান্তিক ঘটনায় মৃত্যু হয় সঞ্জয় কাপুরের। ইংল্যান্ডে একটি পোলো ম্যাচ চলাকালীন ৫০ বছর বর্ষীয় সঞ্জয়ের গলায় হঠাৎই ঢুকে পড়ে একটি মৌমাছি। ঘটনার পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় সঞ্জয়ের। গত পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে ইবোলা ভাইরাস, নিপা ভাইরাস, হেন্ড্রা ভাইরাস, সার্স-কোভ, মার্স-কোভ, সার্স কোভ-২ (করোনা)–এর মতো বহু সংক্রমণের আক্রমণে জেরবার হয়েছে বিশ্ব। জেনে আশ্চর্য হবেন এই সবকটি ভাইরাসের জন্যই দায়ী হল বাদুড়। বাদুড়ের লালায় থাকা এই ভাইরাস হল আরএনএ ভাইরাস। আরএনএ ভাইরাস বেশি মারাত্মক কারণ, এটি পরিবেশের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিজের মধ্যে পরিবর্তন ঘটিয়ে বেঁচে থাকতে পারে।