পায়রা খাওয়ানোর জায়গা বন্ধের নির্দেশ মহারাষ্ট্র সরকারের। পায়রার বিষ্ঠা থেকে ছড়ানো শ্বাসযন্ত্রের রোগের আশঙ্কায় এই উদ্যোগ নিয়েছে সে রাজ্যের সরকার। ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র সরকার মুম্বই শহরের সব ‘কবুতর খানা’ বা পায়রা খাওয়ানোর জায়গা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। বৃহন্মুম্বই পৌরসংস্থাকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে বলা হয়েছে বলে খবর।
শিবসেনা নেত্রী মনীষা কায়ন্ডে প্রথম এই বিষয়টি মহারাষ্ট্র বিধান পরিষদে তুলেছিলেন। তিনি জানান, “এই কবুতর খানাগুলি বা পায়রা খাওয়ানোর জায়গাগুলো আশেপাশের বাসিন্দাদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। পায়রার বিষ্ঠা ও পালক থেকে মানুষ শ্বাসকষ্ট সহ নানা অসুখে ভুগছে।” বিজেপি নেত্রী চিত্রা ওয়াঘ বলেন, “আমার এক আত্মীয় পায়রার বিষ্ঠা থেকে হওয়া শ্বাসকষ্টে ভুগে মারা গিয়েছেন।”
এই বিষয়ে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের পক্ষে বক্তব্য রাখেন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী উদয় সামন্ত। তিনি জানান, বর্তমানে মুম্বই শহরে মোট ৫১টি কবুতর খানা রয়েছে। দ্রুত সেগুলি বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এছাড়া, জনগণকে পায়রা খাওয়ানোর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন করতে একটি প্রচার অভিযানও চালানো হবে। তিনি আরও বলেন, অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে, বহু জনবহুল স্থানে বাড়াচ্ছে পায়রা খাওয়ানোর উদ্যোগ। দাদরের প্রসিদ্ধ কবুতর খানাটি একবার বন্ধ করা হলেও পরে আবার চালু হয়ে যায় স্থানীয়দের উদ্যোগে।
উল্লেখ্য, আগেই সান্তাক্রুজ পূর্ব ও পশ্চিম এবং দৌলতনগরের কিছু অবৈধ পায়রা খাওয়ানোর থেকে ভেঙে সেগুলোর জায়গায় ট্রাফিক আইল্যান্ড বা মিয়াওয়াকি বাগান তৈরি করা হয়েছে। তবে এই ধরনের পদক্ষেপে প্রতিবাদও হয়েছে। গত বছর ধনতেরাসে গওয়ালিয়া ট্যাঙ্ক এলাকার পুরনো কবুতর খানা ভেঙে ফেলার প্রতিবাদে সরব হন পশুপ্রেমী ও পাখিপ্রেমীরা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, রাজনৈতিক চাপে ভোটের স্বার্থে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পরই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
‘জাস্ট স্মাইল চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর স্নেহা ভিসারিয়া জানান, “এই কবুতর খানাটিতে তিন মাস আগেও খাবার বন্ধ করায় বহু পায়রা মারা যায়। এবার আবার জায়গাটি ভেঙে ফেলা হল। সংবিধান অনুযায়ী, পশু-পাখির প্রতি দয়া দেখানো আমাদের দায়িত্ব। ২০২২ সালে পশু কল্যাণ বোর্ডও এই জায়গায় পায়রা খাওয়ানোর পক্ষে চিঠি দিয়েছিল।”এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বহু পশুপ্রেমী সংগঠন ও জৈন ধর্মীয় গোষ্ঠী, রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কাছে চিঠি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাঁদের দাবি, এসব পায়রা খাওয়ানোর জায়গা শুধু খাওয়ানোর জন্যই নয়, এটা সংস্কৃতির অংশ এবং মানবিকতার প্রতীক।