একেবারে ছোট দুটি দ্বীপ নিয়ে তৈরি একটা দেশ! তার নাম ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো। সেখানেই গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ছোট এই দেশে মোদী সফরে খুশির হাওয়া বিহারে। অকালে উৎসবে মেতে উঠেছেন সে রাজ্যের মানুষ। এমনকী ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো সফরে বারবার উঠে এসেছে বাংলার প্রতিবেশী এই রাজ্যের কথা। ভাবছেন তো মোদীর বিদেশ সফরে কেন উঠে আসছে বিহারের কথা!
আদৌতে ছোট দেশ ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর সঙ্গে বিহারের একটা গভীর যোগাযোগ আছে! সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কমলা পারসাদ বিশ্বেশ্বরের সঙ্গে যোগ রয়েছে বিহারের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কমলার সাক্ষাৎ হয়। আর এই সাক্ষাতের পরেই ‘ঘরের মেয়ে’ প্রধানমন্ত্রী কমলা পারসাদ বিশ্বেশ্বরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বক্সার মানুষ।
বলে রাখা প্রয়োজন, কমলা পারসাদ বিশ্বেশ্বরের পূর্বপুরুষরা বিহারের বক্সার বাসিন্দা ছিলেন। বক্সার জেলার ভেলুপুরের ইটাধি ব্লকে কমলার পৈতৃক গ্রাম। জনসংখ্যা খুব বেশি হলে হবে ১০০০! আর সেই গ্রামই এখন আন্তর্জাতিক মানচিত্রে উঠে এসেছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কমলা পারসাদ বিশ্বেশ্বরের সাক্ষাতের পর। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কমলার জন্ম যদিও ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো’তে হয়েছে। তবে তাঁর পূর্বপুরুষরা, বিশেষ করে ঠাকুরদা পণ্ডিত রাম লখন মিশ্র, ১৮৮০-৯০ সালে কলকাতা বন্দর থেকে ভোলগা জাহাজে করে ত্রিনিদাদে গিয়েছিলেন। আর সেই থেকেই কমলাদের বসবাস ছোট্ট অই দেশেই।
যদিও এখনও কমলার পরিবারের বহু আত্মীয়ই বিহারের বক্সারে থাকেন। এই আত্মীয় জগদীশ মিশ্র সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, একবার গ্রামে এসেছিল কমলা পারসাদ বিশ্বেশ্বর। সেই সময় তাঁর সঙ্গে৪ দেখা হয়েছিল। তিনি বলেন, আংকেল বলে ডেকেছিল। জগদীশ জানিয়েছেন, ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর কমলা তাঁর পৈতৃক গ্রাম দেখতে এসেছিল। এলাকা-বাড়ি ঘুরে দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। জগদীশ জানান, সেই সময় কমলা বলেছিলেন আমি আজ যা আছি তা আমার পূর্বপুরুষ এবং এই দেশের মানুষের আশীর্বাদেই।
তবে আবার যাতে কমলা বাড়ি আসে সেই আবেদনও জানিয়েছেন তাঁর আত্মীয়রা। জগদীশ জানিয়েছেন, ঘরের মেয়ে আমার বাড়ি আসুক এটাই চাই। পরিবারের সকল সদস্যরা অপেক্ষায় আছে। বলে রাখা প্রয়োজন, কমলা পারসাদ বিশ্বেশ্বরের শিক্ষা ও আইনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে। দীর্ঘ সময় ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে কাজ করেছেন। শিক্ষা প্রসারে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরপর ২০১০ সালে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কমলা ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।
বলে রাখা প্রয়োজন, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশজুড়ে আছে ভারতীয় বংশদ্ভুত। বিহার সহ দেশের বহু প্রান্ত পূর্বজরা সেখানে নিজেদের জায়গা তৈরি করে। এরপর তাঁদের পরিবাররাও নিজেদের সেখানে স্থায়ী বাসিন্দা করে ফেলেছেন।