ফের খবরের শিরোনামে ভারতীয় ক্রিকেটের ঐতিহ্যবাহী পতৌদি পরিবার। তাঁদের ১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তিকে এবার ‘শত্রুসম্পত্তি’ ঘোষণা করে তার পুরোটাই সরকারকে বাজেয়াপ্ত করার রায় দিল মধ্যপ্রদেশের হাই কোর্ট। ফলে এক জোরদার ধাক্কা খেলেন শর্মিলা ঠাকুর এবং তাঁর পুত্র সইফ আলি খান। ২০১৫ সালে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে নিজেদের পারিবারিক সম্পত্তিতে অধিকারের দাবিতে মামলা করেছিলেন তাঁরা। শেষপর্যন্ত আদালতের রায়ে তাঁদের হাতে যেন পড়ে থাকল শুধু পেনসিলই।
এর আগে ২০০০ সালে জেলা আদালতের রায়ে অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর, তাঁর পুত্র অভিনেতা সইফ আলি খান, এবং দুই কন্যা সোহা আর সাবাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল পতৌদি পরিবারের উত্তরাধিকারী হিসেবে। তবে ২০১৪ সালে মধ্যপ্রদেশ সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয় যে পতৌদি পরিবারের সম্পত্তি যা কি না আদতে নবাব হামিদুল্লাহ খানের তা Enemy Property Act 1968 অনুসারে ‘শত্রুসম্পত্তি’ হিসেবে বিবেচিত হবে। আর তা সরকার বাজেয়াপ্ত করবে।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
এর কারণ নবাব হামিদুল্লাহ খানের বড় মেয়ে আবিদা সুলতান ১৯৫০ সাল নাগাদ বিয়ে করে পাকিস্তানে চলে যান এবং পাকাপাকিভাবে সেখানেই বসবাস শুরু করেন। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই নবাব তার উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেন মেজ মেয়ে সাজিদাকে। সম্পর্কে যিনি ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার মনসুর আলি খান পতৌদির মা। এবং সইফ আলি খানের ঠাকুমা। সাজিদা সুলতানের থেকেই এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির অধিকারী হন শর্মিলা ঠাকুর কিংবা সইফ আলি খানেরা। যার মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাগ স্টাফ হাউস, নূর-উস-সাবাহ প্যালেস, ভোপালের ৫,৭৯৬ একর জমি এবং ভোপালের বাইরে আরও ১,৩৭০ একর জমি।
ইউটিউবেও জাজবাত, আপডেট থাকুন আমাদের সঙ্গে
কিন্তু আইন অনুযায়ী, পাকিস্তান বা চিনের মত ‘শত্রু রাষ্ট্রে’ চলে যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পত্তির ওপর উত্তরাধিকারীদের কোনও অধিকার থাকবে না। আর যেহেতু পতৌদি পরিবারের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতেন পরবর্তীতে পাকিস্তানের নাগরিক হওয়া নবাবের বড় মেয়ে আবিদা সুলতানই। তাই ১৫ হাজার কোটি টাকা মূল্যের এই সম্পত্তিও ‘শত্রু সম্পত্তি’ হিসেবেই দেখছে সরকার। আর ২০১৪ সালে তা বাজেয়াপ্ত করার ঘোষণাও করা হয়। এরপর ২০১৫ সালে সেই সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলেন সইফ আলি খান। শুক্রবার সেই মামলাই খারিজ করে দিয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত বহাল রাখল ভোপাল হাই কোর্ট। ফলে নবাব পরিবারের বংশধর হয়েও হাত খালিই থেকে গেল সইফের।