বিহারে বিধানসভা ভোটের আগে ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে চরমে বিতর্ক। নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা নিরীক্ষণের উদ্যোগ নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। কমিশনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করল একটি অসরকারি সংস্থা। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস বা এডিআর (ADR) নামক ওই অলাভজনক সংগঠনের দাবি, ভোটার তালিকায় নাম তুলতে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র চাওয়া হচ্ছে। তা না দিতে পারলে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারেন লক্ষ লক্ষ ভোটার।
গত ২৫ জুন ‘বিশেষ নিবিড় নির্বাচনী উদ্যোগ’ (SIR) ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। সেই অনুযায়ী যাঁদের নাম ২০০৩ সালের ভোটার তালিকায় ছিল না, তাঁদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দাখিল করতে হবে। তবেই এ বার ভোট দিতে পারবেন। জনস্বার্থ মামলায় এডিআর-এর অভিযোগ, এত কম সময়ের মধ্যে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র চাওয়া হচ্ছে। অথচ, সহজলভ্য আধার কার্ডকে প্রমাণপত্র হিসেবে ধরা হচ্ছে না। নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে না পারলে প্রায় ৩ কোটি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
কমিশনের এই উদ্যোগ আইনসঙ্গত নয় বলে দাবি মামলাকারীর আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের। তিনি বলছেন, “আধার বা রেশন কার্ডের মতো পরিচয়পত্র ধর্তব্যেই আনেনি কমিশন। এর ফলে প্রান্তিক শ্রেণির মানুষেরা ভোট দানের অধিকার থেকে বাদ পড়তে পারেন।” বিহারের নির্বাচনের ঠিক কয়েক মাস আগে কমিশনের এই উদ্যোগের সময়কাল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। মৌলিক অধিকারের ১৪,১৯ ও ২১ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।
একই দাবিতে কমিশনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বিরোধী দলগুলিও। এদিকে নির্বাচন কমিশনের পাল্টা দাবি, এই উদ্যোগের লক্ষ্য বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া। কিন্তু বিরোধীদের দাবি, বিরোধী দলের ভোটারদের বাদ দিতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। তাঁদের কথায়, শুধু ভোটারের একার নয়, সংশ্লিষ্ট ভোটারের মা-বাবারও নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র চাওয়া হয়েছে। তা এত কম সময়ের মধ্যে খুঁজে পাওয়া কঠিন।
যদিও এই মামলার শুনানির দিন এখনও ধার্য করেনি শীর্ষ আদালত। বিহারের পরে আগামী বছরে বাংলাতেও রয়েছে বিধানসভা ভোট। দিনকয়েক আগে কমিশনের ওই SIR ফর্ম নিয়ে সরব হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ভোটার তালিকা সংশোধনের নতুন নিয়মে গরমিল রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা দাবি করেছিলেন, বিহারকে অজুহাত করে বাংলার ভোটকে টার্গেট করা হচ্ছে।