শনিবার এজবাস্টনে নায়ারের ‘করুণতম’ পরিণতিটা হয়ত দেখে ফেললেন ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা। আবার একই দিনে ক্রমশ অভ্যস্ত হয়ে ওঠা দৃশ্যটাও চোখের সামনে ফুটে উঠল তাঁদের। ২০২২ এর ডিসেম্বরে করুণ নায়ার সুযোগটা চেয়েছিলেন ক্রিকেটের কাছে। সেখানে মাত্র কয়েকদিন পরই ঋষভ পন্থের প্রার্থনাটি ছিল খোদ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে। উত্তরাখণ্ডের রাস্তায় ভয়ঙ্কর গাড়ি দুর্ঘটনার পর নিজের জীবনের চাইতে মূল্যবান আর কী হতে পারত তাঁর কাছে?
ঈশ্বর সেই প্রার্থনা মঞ্জুর করতেই এ বার ঋষভের পালা। তিনি যেন ক্রমাগত এই দৃশ্যটাই দেখিয়ে চলেছেন বাঁচার মত বাঁচা কাকে বলে। ভয়ঙ্কর সেই দুর্ঘটনার রেশ কাটিয়ে শুধু মাঠেই ফিরেই আসেননি। জিতেছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। যদিও মাঝখানে অস্ট্রেলিয়া সফর এবং আইপিএলে আবার তাঁকে চূড়ান্ত কঠিন সময় কাটাতে হয়েছে। তবে এ বার চলতি ইংল্যান্ড সফরে ফের দেখিয়ে দিচ্ছেন, চ্যাম্পিয়নরা এভাবেই ফিরে আসে। তাঁদের ফিরে আসতেই হয়। চলতি সফরে বারবারই প্রত্যাবর্তনের একটি করে নয়া পরিভাষার জন্ম দিচ্ছেন পন্থ। এদিন এজবাস্টনে ৫৮ বলে ৬৫ রানের (৮টি চার ও ৩টি ছক্কা) স্বভাবসিদ্ধ ইনিংসটি তারই জলজ্যান্ত নমুনা। হাল আমলে ইংল্যান্ডের ‘বাজবল’ ধার করে তাই বলাই যায়, ঋষভের ‘পন্থবল’-এর কোনও জবাব নেই স্টোকদের কাছে।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
চলতি সিরিজে চার ইনিংসে এই নিয়ে তৃতীয় বার ৫০ রানের গণ্ডি টপকালেন পন্থ। লিডসের প্রথম টেস্টে দুই ইনিংসেই হাঁকিয়েছিলেন সেঞ্চুরি। এ বার বার্মিংহামেও দ্বিতীয় ইনিংসে আরও একটি অর্ধ শতরান। তবে তার থেকেও বড় কথা, ইংল্যান্ডের মাটিতে শেষ ৭টি ইনিংসে ছ’বারই ৫০+ স্কোর করলেন তিনি। যে ধারা চলছে গত ২০২২ এর সফর থেকে। তাঁর দুর্ঘটনার আগে থেকে। তবে সেই ঘটনার পর যেন তিনি আরও পরিণত। আরও পরিপক্ক। যিনি একাধারে মারমুখী আবার প্রয়োজনে ধৈর্যশীলও। তেমন হলে দশটা বলও অনায়াসে খেলে দিতে পারেন কোনও রান না করে।
তাই তো যে সুনীল মনোহর গাভাস্কার অস্ট্রেলিয়া সফরে পন্থের জঘন্য শট নির্বাচন দেখে বলেছিলেন, “স্টুপিড!” সেই গাভাস্কারের মুখ থেকেই বের হয়, “সুপার্ব!” অবশ্য এ তো কিছুই না। চলতি সিরিজে এমনটাও দেখা গিয়েছে যে পন্থ নিজেই নিজেকে ধমক দিচ্ছেন ভুল শট খেলার জন্য। সব মিলিয়ে ইংল্যান্ড সিরিজ যেন সম্পূর্ণ এক ঋষভ পন্থকে নিয়ে এসেছে ক্রিকেট দুনিয়ার সামনে। এই ঋষভকে কি পুরনো ঋষভও চেনেন?