উত্তর প্রদেশের ছেলে শুভাংশু শুক্লা আন্তর্জাতিক মহাকাশ ষ্টেশনে পৌঁছে গেছেন, সেই রাজ্যেই অন্ধবিশ্বাসের এমন এক ঘটনা প্রকাশ্যে এল, যা গোটা দেশের কাছেই লজ্জার। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ের। তান্ত্রিকের ঝাড়ফুঁকের বলি হতে হল এক তরুণীকে। তার আগে তরুণীকে খাওয়ানো হয় প্রস্রাব এবং বাথরুমের নোংরা জল। তারপর চেপে ধরা হয়। কিছুক্ষণ ছটফট করে মৃত্যুর কলে ঢলে পড়েন তরুণী।
রবিবার আজমগড়ে কাঁধপুর থানার পাহালিয়ানপুর গ্রামের বাসিন্দা বছর ৩৫ এর অনুরাধার সন্তান নেই। তিনি চান কোল আলো করে আসুক রাজপুত্র বা রাজকন্যা। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে সেই আশা পূর্ণ হয়নি। সন্তান লাভের আশা পূর্ণ করে দেবেন কথা দিয়েছিলেন এক তান্ত্রিক। অভিযোগ, তাঁর অত্যাচারেই মৃত্যু হল মা হতে চাওয়া অনুরাধার।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
মৃতার পরিবার সূত্রে খবর, ১৮ বছর আগে বিয়ে হলেও অনুরাধা ছিলেন নিঃসন্তান। স্বামীর সঙ্গে হরিয়ানায় থাকতেন। সম্প্রতি চিকিৎসার জন্য বাপের বাড়ি নাইপুর গ্রামে আসেন অনুরাধা। সন্তান লাভের আশায় মা তাঁকে গ্রামেরই এক তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে যান। অনুরাধার সমস্যা সমাধানের নামে এক লাখ টাকা দাবি করে তান্ত্রিক।
বিস্তর দামদর করার পর তান্ত্রিককে অগ্রিম ২২ হাজার টাকা দিয়ে আসেন অনুরাধা। রবিবার অভিযুক্ত তান্ত্রিক রাতে অনুরাধা এবং তাঁর মা-কে নিজের বাড়িতে ডেকে তন্ত্রসাধনা শুরু করে। অনুরাধার মা জানিয়েছেন, অনুরাধার ওপর অশুভ শক্তি ভর করেছে জানিয়ে তান্ত্রিক প্রথমে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
এর পর তাঁকে কমোড, নর্দমার জল এবং প্রস্রাব খেতে বাধ্য করা হয়। নোংরা জল না খেতে চাইলে অনুরাধার গলা টিপে ধরে ওই তান্ত্রিক। এতেই অনুরাধা অসুস্থ হয়ে পড়েন। অবস্থার অবনতি হতে দেখে তান্ত্রিক অনুরাধাকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা অনুরাধাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর পর তান্ত্রিক অনুরাধার দেহ নিয়ে ফিরে আসে নিজের বাড়ি। কিছুক্ষনের মধ্যেই অনুরাধার হুঁশ ফিরে আসার কথা জানিয়ে সেখান থেকে চম্পট দেয়।
ঘটনার খবর পেয়ে কান্ধ্যাপুরের এসপি মধুবনকুমার সিংহ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। অনুরাধার দেহ পাঠানো হয় ময়নাতদন্তে। মধুবন জানিয়েছেন, অনুরাধার স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পরে অভিযুক্ত তান্ত্রিক নিজে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। তাকে গ্রেফতার করা হয়